হালুয়াঘাটে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে বন্যা, পানি নামছে ধীরগতিতে
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় অতি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত এলাকার পানি ধীরগতিতে নামছে। পৌর এলাকার ৪০ ভাগ পানি নেমে গেছে। ধীরগতিতে কমতে শুরু করেছে গ্রামাঞ্চলের পানিও। দুর্গতদের জন্য হালুয়াঘাটের সেন্ট এন্ডুজ ও মেরি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে প্রশাসন।
আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া পরিবারের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পরে আশ্রয় নেওয়া ১০ পরিবার গতকালই নিজ বাড়িতে ফিরে গেছে। এখনো ৩০টি পরিবারের শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে।
আজ সকাল থেকে নতুন করে বেশ কিছু পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছে। দর্শা নদীর পানি আজও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজ সকালে এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গত মঙ্গলবার দুপুরে ও বিকেলে হালুয়াঘাট উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার গ্রামাঞ্চলের কয়েক হাজার বসতবাড়ি, কৃষি জমি, পুকুরসহ প্লাবিত হয়। পরে পৌর এলাকার দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনাও প্লাবিত হয়।
ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টির ফলে সীমান্তবর্তী দর্শা নদী উপচে এলাকায় সাময়িক বন্যা দেখা দেয়। পরে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পাঁচ টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, পাঁচ টন খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে আরো ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।
হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের কাছে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরের পর হঠাৎ করে দর্শা নদী উপচে বিস্তীর্ণ এলাকায় পানি প্রবেশ করে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়ে পৌরসভার গার্লস স্কুল রোড, পাগলপাড়াসহ নিম্নাঞ্চল। এ ছাড়া উপজেলার গোপীনগর, কাওয়ালীজান, বটগাছিকান্দা, ধুরাইল, ভুবনকুড়া, কৈচাপুর ইউনিয়নসহ সবকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী ভুবনকুড়া, গাজিরভিটা ও সদর ইউনিয়নের ৩০ শতাংশ নিচু পুকুর প্লাবিত হয়ে ভেসে গেছে মাছ। এতে গ্রামীণ মৎস্যচাষিদের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতির হয়েছে। তবে ফসলের মৌসুম না হওয়ায় কৃষির তেমন ক্ষতি হয়নি।
এ ছাড়া একই সময়ে ধোবাউড়ার নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ১০টি গ্রাম।