হেফাজতের বিক্ষোভ শনিবার, হরতাল রোববার
বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভে হামলায় নেতাকর্মী নিহত ও আহত হওয়ার প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ ও রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এ সময় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হকসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, অবিলম্বে নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশ থেকে চলে যেতে হবে। নেতকার্মীদের ওপর হামলাকারী পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আব্দুর রব ইউসুফী অভিযোগ করেন, হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মুসল্লিরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলেও সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা হামলা করছে ও বাধা দিচ্ছে।
কাল শনিবার বিক্ষোভ ও আগামী রোববার সারা দেশে হরতালের কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফয়জুল করিম।
ফয়জুল করিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে মুসল্লি ও মাদ্রাসার ছাত্রদের ওপর হামলা এবং নিহতের ঘটনায় সারা দেশে কাল শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করা হবে। এ ছাড়া নরেন্দ্র মোদিকে অবিলম্বে ভারতে ফেরত পাঠাতে হবে, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
ফয়জুল করিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আজ সন্ধ্যায় হেফাজতে ইসলামের নেতারা তাৎক্ষণিক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেন।
পুলিশ সদস্য ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার ছাত্ররা জানান, আজ জুমার নামাজের পর ঢাকার বাইতুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় মুসল্লিদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে দুপুর আড়াইটার দিকে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে মিছিল বের করেন ছাত্ররা। এটি কিছুদূর যাওয়ার পর পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় ছাত্ররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণের জন্য রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে মাদ্রাসার ছাত্ররা হতাহত হন। এ সময় হাটহাজারী সদর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) একটি পিকআপ গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ সৃষ্টি হলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
নিহত চারজনের মধ্যে তিনজন হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র, একজন পথচারী। নিহত ছাত্ররা হলেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের মো. রবিউল আলম, মাদারীপুরের মেহেরাজুল ইসলাম ও হাটহাজারীর মো. জামিল উদ্দীন। পথচারীর নাম মো. আবদুল্লাহ।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিহতদের দেখতে যান হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি নিহতদের জন্য দোয়া পরিচালনা করেন।