১৩ বছরে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে তিনগুণ : তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘১৩ বছরে প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। ক্রয়ক্ষমতা তিনগুণ বেড়েছে।’
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির সভাপতি খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় কবি নির্মলেন্দু গুণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাচিকশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে একটি নিরস্ত্র জাতি সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরিত হয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। আর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে দেশ পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়ন অগ্রগতি যাদের পছন্দ হয় না, তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার রাজনীতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যদি বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন না করতো, তাহলে আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি কোনটাই রক্ষা পেত না। তার নেতৃত্বেই যেহেতু বাঙালিদের ইতিহাসের পাতায় জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়, তিনি আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টিকে রক্ষা করেছেন; সেই কারণেই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে গত ১৩ বছরে মানুষের মাথাপিছু আয় ৬০০ থেকে ২৬০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। আজকে গ্রামে হ্যারিকেন দেখা যায় না। হ্যারিকেন-চেরাগ-কুপি বাতি এখন ড্রয়িং রুমে সাজিয়ে রাখতে হবে। গত ১০ বছরে কৃষিতে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে শিশুরা এখন হালের বলদ চেনে না। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা এগুলো দেখেও দেখেন না।’
‘আজকে প্রতিটি মানুষ ভালো আছে অথচ মির্জা ফখরুল সাহেবরা মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য, বিভ্রান্ত করার জন্য নানাধরনের কর্মসূচি পালন করছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দেশ বদলে গেছে, কবিতায় কুঁড়েঘর আছে, বাস্তবে সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। যে ছেলে ১২ বছর আগে বিদেশ গেছে, সে এসে শহর-গ্রাম চিনতে পারে না। আজ শহরের একটি ছেলের সঙ্গে গ্রামাঞ্চলের ছেলের বেশভূষার কোনো পার্থক্য নেই। এই যে পরিবর্তন, এটি শেখ হাসিনার কারণে। আর মির্জা ফখরুল সাহেবরা দুর্নীতিতে দেশকে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, হাওয়া ভবন বানিয়ে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করেছে এবং সমস্ত ব্যবসার ওপর টোল বসিয়েছে। তারা মানুষকে এগুলোই দিতে পেরেছে, অন্য কিছু নয়।’
সম্প্রচারমন্ত্রীর সঙ্গে বেসরকারি রেডিও চ্যানেল মালিকদের বৈঠক বিকেলে মন্ত্রী সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের বেসরকারি রেডিও চ্যানেল মালিকদের সংগঠন প্রাইভেট রেডিও ওনার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ-প্রাওব প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। প্রাওব প্রেসিডেন্ট এশিয়ান রেডিও’র চেয়ারম্যান আলহাজ মো. হারুন-উর-রশিদের নেতৃত্বে সংগঠনের উপদেষ্টা মো. নিজাম উদ্দিন ভুঁইয়া লিটন ও মনোরঞ্জন দাস, সদস্য এটিএম জিয়া হাসান, সাজ্জাদ হোসেন রশীদ, কাওসার আহমেদ, সামস সুমন, শাহ রেজাউল মাহমুদ, আনিসুজ্জামান, কামরুজ্জামান কামাল প্রমুখ সভায় অংশ নেন।
এ সময় ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে বেসরকারি রেডিও সম্প্রচার শুরু হয়। ২৮টি প্রাইভেট রেডিও লাইসেন্স দেওয়া আছে, তার মধ্যে ১৯টি সম্প্রচারে আছে। এ ছাড়া রয়েছে কমিউনিটি রেডিও। মানুষ রেডিও শোনা অনেকটা ভুলে গিয়েছিল, প্রাইভেট রেডিও আবার শ্রোতা সৃষ্টি করেছে, মানুষকে অনেকটা রেডিওমুখী করেছে, এজন্য তাদের ধন্যবাদ।’
লাইসেন্সপ্রাপ্তির সময় দেওয়া জামানতের অর্থ ফেরতদান, বিটিআরসির স্টেশন চার্জ কমানো, সরকারি বার্ষিক ফি রহিত করা, বাংলাদেশ বেতারের ধারণকৃত সংবাদ প্রচার, জাপান থেকে আমদানি গাড়িতে দেশি বেতার ফ্রিকোয়েন্সি সংযোজন, এফএম বেতারকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১০ সংস্কার ও বেসরকারি বেতারগুলোর মধ্যে সংযোগবৃদ্ধির দাবি জানান প্রাওব সদস্যরা। মন্ত্রী সেগুলো পরীক্ষান্তে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব বাংলাদেশ কেন জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত ছিল সে নিয়ে নানা কথা বলেছেন। তিনি চান বাংলাদেশ বিবাদে জড়াক। কিন্তু বাংলাদেশ কোনো বিবাদে জড়াতে চায় না। আর ভারত, পাকিস্তান কেন বিরত ছিল সেই ব্যাখ্যা যদি মির্জা ফখরুল সাহেব দেন খুব ভালো হয়। সবচেয়ে বড় কথা আমরা পৃথিবীতে শান্তি চাই এবং শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে আমরা কোনো পক্ষভুক্ত হতে চাই না।’