২২ মণ ওজনের বাদশাহর দাম হাঁকছেন ১২ লাখ
শখ করে তার নাম রাখা হয়েছে ‘বাদশাহ’। পাকিস্তানি সিন্ধি জাতের গরু এটি। দৈর্ঘ্য নয় ফুট ও উচ্চতা সাড়ে পাঁচ ফুট। ওজন ২২ দশমিক ২৫ মণ। গরুর মালিক দাম হাঁকিয়েছেন ১২ লাখ টাকা। এরই মধ্যে গরুটির দাম উঠেছে সাত লাখ টাকার ওপরে।
নওগাঁর মান্দা উপজেলার নলঘোর গ্রামে রফিকুল ইসলামের বাড়ি। পেশায় তিনি একজন মিষ্টি বিক্রেতা। রফিকুল ইসলামের খামারেই পরম আদর যত্নে বেড়ে উঠেছে গরুটি। আসন্ন কোরবানিতে জেলার বিশেষ আকর্ষণ বাদশাহ।
গরুটির মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘১২ লাখ বা এর কাছাকাছি দাম পেলে গরুটি তিনি বিক্রি করবেন।’ স্থানীয় বিক্রেতারা গরুটি দেখতে আসছেন, বিভিন্ন দাম বলছেন। একজন ব্যবসায়ী এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সাত লাখ ২৫ হাজার টাকা দাম বলেছেন। কিন্তু আরও দাম ওঠার আশায় আছেন তিনি।
বাদশাহর মালিক রফিকুল নিজেই মিষ্টি তৈরি করে স্থানীয় পিরপালী বাজারে বিক্রি করেন। বাদশাহ ছাড়াও রফিকুলের খামারে সিন্ধি ও ফ্রিজিয়ান জাতের দুইটি গাভি আছে। দিনের বেশিরভাগ সময় রফিকুলকে মিষ্টির দোকানেই থাকতে হয়। তাঁর স্ত্রী ছবিয়া বেগম মিষ্টি তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন। মা-বাবার কাজের ব্যস্ততার কারণে বাদশাহ ও অপর দুই গাভীর পরিচর্যা করে তাদের মেয়ে রিমা খাতুন। প্রায় দেড় বছর ধরে করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় বেশ ভালোভাবেই গরুগুলোর পরিচর্যা করছে রিমা।
রিমা জানায়, যখন বাবা বাদশাহকে কিনে নিয়ে আসে, তখন ওর স্বাস্থ্যই ছিল না। আড়াই বছর ধরে অনেক যত্ন করে বাদশাহকে বড় করেছি। বাদশাহর প্রতি মায়া জন্মে গেছে। ওকে বিক্রি করতে হবে ভাবলেই খুব খারাপ লাগে। ছোলা, মাষকলাই, মসুর ডালের গুঁড়া, ভুসি, খৈল, ভুট্টা, খুদের ভাত ও কাঁচা ঘাস হলো বাদশাহর প্রতিদিনের খাবার। মাঝে মধ্যে কলা ও আপেলও খাওয়ানো হয়। শুরুর দিকে কম খাবার লাগলেও এখন সব মিলিয়ে দিনে প্রায় ২০ থেকে ২২ কেজি খাবার লাগে বাদশার। গরুটির পেছনে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা খরচ হয়।
মান্দা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অভিমান্য চন্দ্র বলেন, ‘রফিকুলের গরুটি আমি দেখেছি। গরুটি লালন-পালনের পরামর্শ চাইতে বেশ কয়েকবার তিনি উপজেলা অফিসে এসেছিলেন। আমাদের ডিজিটাল স্কেলে ওজন করে দেখেছি গরুটির ওজন ২২ মণের ওপরে। লাল রঙের বিশাল আকৃতির এ ষাঁড়টি সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছে।’