২৯ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত, ভোটকেন্দ্রে হাতবোমা বিস্ফোরণ, অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রার্থীর ভোটবর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে পঞ্চম ধাপে ২৯ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ।
আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ হয়। এই ধাপে সব পৌরসভায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হয়। ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ফলাফল গণনা শুরু হয়। গণনা শেষে কেন্দ্রেই প্রার্থীদের এজেন্টদের কাছে ফলাফল হস্তান্তর করা হবে। পরে সেই ফলাফল যাবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা সব কেন্দ্রের ফলাফল মিলিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভায় ভোট চলাকালে সহিংসতায় ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। ওই ব্যক্তির নাম ছোটন অধিকারী (৫৪)। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুজন।
একই পৌরসভায় অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী সিদ্দিকুল আলম। আজ বেলা ১১টার দিকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, এখানে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হচ্ছে না। মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে এলেও তাদের ভোট দিতে দিচ্ছে না সরকারি দলের সমর্থকরা।
এদিকে রাজশাহীর চারঘাট পৌরসভা নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। বেলা ১১টার দিকে সারদা থানাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এ ধাপের নির্বাচনি লড়াইয়ে মেয়র পদে রয়েছেন ১০০ জন প্রার্থী, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৩৬৬ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে রয়েছেন এক হাজার ৩১৮ জন। এ ছাড়া এদিন চার উপজেলায় উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণও করা হয়েছে।
পঞ্চম দফায় ৩১ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। আগের ধাপের সৈয়দপুর পৌরসভা এসে এ ধাপে যুক্ত হয়েছে। এদিকে যশোর পৌরসভা ও জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার ভোট হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত করা হয়েছে। এবং চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভার ভোটে সব পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না। ফলে ২৯ পৌরসভায় আজ ভোটগ্রহণ হয়েছে।
যেসব পৌরসভায় ভোট হয়েছে সেগুলো হলো যশোরের কেশবপুর, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর, চট্টগ্রামের মিরসরাই, বারইয়ারহাট ও রাঙ্গুনিয়া, কিশোরগঞ্জের ভৈরব, জামালপুরের সদর, মাদারগঞ্জ ও ইসলামপুর, ময়মনসিংহের নান্দাইল, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, গাজীপুরের কালীগঞ্জ, রংপুরের হারাগাছ, রাজশাহীর দুর্গাপুর ও চারঘাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, বগুড়া সদর, জয়পুরহাট সদর, মাদারীপুর সদর ও শিবচর, ভোলার সদর ও চরফ্যাশন, হবিগঞ্জ সদর, চাঁদপুরের শাহরাস্তি ও মতলব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর এবং রংপুরের সৈয়দপুর।
এদিন ঝিনাইদহের শৈলকুপা, ফরিদপুরের মধুখালী, রাজশাহীর পবা ও কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনও হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এবার বেশ কয়েক ধাপে পৌরসভা নির্বাচন করছে কমিশন। প্রথম ধাপের তফসিলের ২৪টি পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হয় গত ২৮ ডিসেম্বর। গত ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ভোট হয়। তৃতীয় ধাপে ৬৩টি পৌরসভায় ভোট হয় গত ৩০ জানুয়ারি। চতুর্থ ধাপে ৫৫ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হয় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। আর পঞ্চম ধাপে রোববার ২৯ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে। এদিকে ১১ এপ্রিল ষষ্ঠ ধাপে নয় পৌরসভায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।
আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যেই পৌরসভার ভোট করতে হয়। স্থানীয় সরকার আইন সংশোধনের পর ২০১৫ সালে প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট হয় পৌরসভায়। সেবার ২০টি দল ভোটে ছিল।