৫০ বছর পর সম্পত্তি ফিরে পেল এক অসহায় পরিবার
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সহদেবপুরে দীর্ঘ ৫০ বছর পর বেদখল হওয়া সম্পত্তি আদালতের মাধ্যমে ফিরে পেল এক অসহায় পরিবার। আজ সোমবার দুপুরে জেলা যুগ্ম জজ আদালতের মাধ্যমে লাল নিশান টানিয়ে ভূমি সার্ভে করে ভুক্তভোগী পরিবারকে সম্পত্তি বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর ভুক্তভোগী ওই পরিবারের সম্পত্তিতে জোরপূর্ব গড়ে তোলা বসতঘর ও বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
জেলা যুগ্ম জজ আদালতের পক্ষে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন কচুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন।
এ সময় জেলা যুগ্ম জজ আদালতের নায়েব নাজির গাফফার খান নাদিমসহ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, কচুয়া থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিল।
কচুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, ‘আমরা আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতে এসেছি। এ ছাড়া আমাদের আর কোনো বক্তব্য নেই। কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তারা আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে।’
জেলা যুগ্ম জজ আদালতের নায়েব নাজির গাফফার খান নাদিম বলেন, কচুয়া উপজেলার সহদেবপুর গ্রামের মাস্টারবাড়ির ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম গং বাদী হয়ে ২০০৪ সালে চাঁদপুর জেলা যুগ্ম জজ আদালতে একটি দেওয়ানি বণ্টন মামলা করেন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ২০২১ সালের জুন মাসে বিজ্ঞ জেলা যুগ্ম জজ মামলাটির রায় ঘোষণা ও ডিগ্রি জারি করেন। এতে বাদী ফাতেমা বেগম গং ১০ একর ৪৩ শতাংশ ৮০ পয়েন্ট সম্পত্তি ফিরে পায়। আদালতের রায় অনুযায়ী আজকে আমরা ঘটনাস্থলে এসে ভূমি সার্ভে করে লাল নিশান টানিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছি। এ ছাড়া বাদীর প্রাপ্ত সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে এবং আদালতের রায় কার্যকর করতে ব্যবস্থা নিয়েছি।’
মামলার বাদী ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম মৃত মোবারক হোসেনের স্ত্রী। তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে আমরা আমাদের সম্পত্তি বুঝে পাইনি। আমার স্বামী এই সম্পত্তি বুঝে পাওয়ার জন্য আদালত পারা ও বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। দেরিতে হলেও জেলা জজ আদালত ন্যায়বিচার করে রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের সম্পত্তি ফিরে পেয়েছি। আজকে আদালত লাল নিশান টানিয়ে আমাদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দিচ্ছেন। আমরা আদালতের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
মামলার বিবাদী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘অনেকদিন ধরে আদালতে মামলাটি চলেছে। আজকে আদালতের লোকজন ভূমি সার্ভে করে বাদীর সম্পত্তি বুঝিয়ে দিচ্ছেন। ভূমি সার্ভে শেষ হলে আমরা বুঝতে পারব আমাদের সম্পত্তি ঠিক আছে কি না। যদি ঠিক না থাকে, তাহলে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’