সংলাপ শেষে জাতীয় পার্টিও আশাবাদী
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শেষে এ বিষয়ে সমাধান আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বে ১৮ জনের একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে বিকেলে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দলের নেতারা।
জাতীয় পার্টির দেওয়া প্রস্তাব মেনে এবার নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া হতে পারে এমন কোনো আভাস পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে দলের কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা আশাবাদী। আর আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি যেটা বলেছেন, সেটা উনি সংলাপ শুরু করেছেন। সবার সঙ্গে আলাপ সালাপ করার পর এ বিষয়গুলোতে পরবর্তীকালে যাচাই বাছাই করে সার্বিকভাবে ওনার বিবেচনায় কোনটা করা উচিত, কতটুকু করতে পারবেন সেটা উনি ব্যবস্থা নেবেন। এবং আমাদের সঙ্গে দরকার হলে আবার উনি আলোচনায় বসবেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, সার্চ কমিটির সুনির্দিষ্ট কারো নাম উল্লেখ করেননি তাঁরা। তবে রাষ্ট্রপতি চাইলে সময়মতো নাম দেবেন বলেও তাঁকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির প্রতি জাতীয় পার্টির আস্থা আছে যে তিনি আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
মহাসচিব জানান, নিজেদের পাঁচ দফা ছাড়াও প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশনের জন্য আলাদা বাজেট এবং নির্বাচন কমিশনের অর্থ ব্যয় সংক্রান্ত নিজস্ব ক্ষমতা থাকার কথা বলেছে জাতীয় পার্টি। নির্বাচন কমিশনের সচিবালয় সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকতে হবে, অর্থাৎ কমিশনের সব লোকবল কমিশনই নিয়োগ করবে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের সচিব নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। তাহলেই নির্বাচন কমিশন কারো প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে বলে মনে করে দলটি।
এসব প্রস্তাবের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি কেমন সাড়া দিয়েছেন জানতে চাইলে মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে, আলোচনা এত আন্তরিক ও এত সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল যে এতে আমাদের আস্থা জন্মেছে যে তিনি একটি সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেবেন। যে জটিলতা আছে, যে সমস্যা আছে এটার সমাধান করার জন্য তিনি একজন রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এটা আলোচনায় এলো এবং আমরা আস্থা অর্জন করলাম যে তাঁর আলোচনায় স্বচ্ছতা ছিল, আন্তরিকতা ছিল। দেশের মানুষের প্রতি যে তাঁর দরদ এবং এই যে সমস্যাগুলো নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্টি হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনকে কেন্দ্র করে, এই সমস্যার তিনি আন্তরিকভাবে সমাধান করতে চান।’
রাষ্ট্রপতির এই সংলাপ গণতন্ত্র সুসংহত করতে কতটুকু প্রভাব রাখবে জানতে চাইলে রওশন এরশাদ বলেন, ‘গণতন্ত্র তো আমাদের দেশে আছেই। সুপ্রতিষ্ঠিতই আছে। তা ছাড়া ওনার উদ্যোগকে আমরা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। এর মধ্যে ওনার যে আন্তরিকতা আমরা দেখতে পেলাম, তাতে মনে হচ্ছে যে নিশ্চয়ই উনি উদ্যোগ নেবেন এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য উনি অবশ্যই চেষ্টা করবেন।’