ঝুলে আছে মঞ্জুর হত্যা মামলার কার্যক্রম
তিন বছরেও অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন না আসায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে করা মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুর হত্যা মামলার কার্যক্রম ঝুলে আছে। মামলায় বদলি হয়েছেন ২২ জন বিচারক। তবে এ মামলার নতুন তারিখ ধার্য রয়েছে আগামী ২৯ জানুয়ারি।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আসাদুজ্জামান খান রচি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা আক্তার মামলাটিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছরেও এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। আগামী ২৯ জানুয়ারি এ মামলার তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
আসাদুজ্জামান আরো জানান, প্রতি তারিখে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করা হয়। বিচারক তা মঞ্জুর করে নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন। এ ছাড়া মামলাটি বর্তমানে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম সাইফুল ইসলামের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
মামলার নথিপত্র থেকে জানা যায়, ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন। তখন চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ছিলেন আবুল মঞ্জুর।
জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর আত্মগোপনে যাওয়ার পথে মঞ্জুরকে আটক করে পুলিশ। এরপর ওই বছরের ২ জুন মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও মৃত্যু সনদপত্র পেতে দেরি হওয়ায় ঘটনার ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরের ভাই আবুল মনসুর আহমেদ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করেন। ১৯৯৫ সালের ২৭ জুন এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
দীর্ঘ ১৯ বছর মামলাটি বিভিন্ন কারণে ঝুলে ছিল। বিচার চলাকালে পর্যায়ক্রমে ২২ জন বিচারক বিচারিক কার্যক্রমে নিয়োজিত ছিলেন। এর মধ্যে ২২ জন বিচারক বিভিন্ন কারণে বদলি হয়েছেন। ২০১৪ সালের ২২ জানুয়ারি মামলার ২৩তম বিচারক হিসেবে ঢাকা প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা আক্তার মামলাটির রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়।
এদিকে, মামলার অন্য দুই আসামি মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল লতিফ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শামসুর রহমান শমসেরের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত আছে। এ মামলায় অভিযোগপত্রের ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১২ সালের ২ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন প্রধান আসামি এরশাদ। এর সমর্থনে আদালতে লিখিত বক্তব্যও দাখিল করেছেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।