বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছি, জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
বর্তমান মেয়াদে সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ভাষণ দেওয়া শুরু করেন তিনি। প্রায় আধা ঘণ্টার ভাষণে তিনি পরিসংখ্যান তুলে ধরে গত আট বছরে বিভিন্ন খাতে দেশের উন্নয়নের বর্ণনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার টানা আট বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে নবম বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। আপনারা এই দীর্ঘ সময় ধরে আমাকে এবং আমার সরকারকে আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকার সুযোগ দিয়েছেন। এ জন্য আমি আপনাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি দেশের একটি আজ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন প্রায় আট লাখ কোটি টাকারও বেশি, যা জিডিপির ভিত্তিতে বিশ্বে ৪৪তম এবং ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে ৩২তম। ধারাবাহিকভাবে ৬.৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখে পুরো বিশ্বকে আমরা তাক লাগিয়ে দিয়েছি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.১১%। আগামী বছরের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭.৪%।’ তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি ও সামাজিক সূচকের অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলিকে ছাড়িয়ে গেছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৯তম ও ২০৫০ সাল নাগাদ ২৩তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হবে। জনগণের মাথাপিছু আয় ২০০৫-০৬ সালের ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে আজ ১ হাজার ৪৬৬ ডলার হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার ২০০৫-০৬ সালে ছিল ৪১.৫ শতাংশ। এখন তা হ্রাস পেয়ে হয়েছে ২২.৪% শতাংশ। অতি দারিদ্র্যের হার ২৪.২৩% থেকে ১২ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ১৫-১৬ শতাংশে এবং অতি দারিদ্র্যে হার ৭-৮ শতাংশে নামিয়ে আনা।’ তিনি বলেন, ‘একদিকে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যেমন বেড়েছে, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে থাকায় মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। ২০০৯ সালে মূল্যস্ফীতি ছিল ডাবল ডিজিটে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৫.০৩ শতাংশ।’ তিনি বলেন, সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে।
বিদ্যুৎ
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেই, তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল তিন হাজার ২০০ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় ১৫ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চাই। সেই লক্ষ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। কয়েকটি বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আমরা পরিবেশ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা এবং প্রত্যন্ত চরাঞ্চলসহ সারাদেশে প্রায় ৪৫ লাখ সোলার হোমসিস্টেম বসানো হয়েছে। মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ উৎপাদন করা হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে।’
‘আমরা পরমাণু ক্লাবে যুক্ত হতে যাচ্ছি। পাবনার রূপপুরে ২০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।’
খাদ্য ও কৃষি
সংসদ নেতা বলেন, ‘আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিত ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা। আট বছরে দেশে কৃষি খাতের ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন প্রায় চার কোটি মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ এখন খাদ্য-উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ এবং সবজি উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে। আট বছরে প্রায় ৪০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার কৃষি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বর্গাচাষীদের জন্য কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্পসুদে বিনা জামানতে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করেছি।’
সামাজিক নিরাপত্তা
জাতির উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘১৯৯৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার বয়স্কভাতা, বিধবা ও দুঃস্থনারী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধাভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বিভিন্ন সামজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি চালু করেছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অধীনে চলতি বছর ১৪২টি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ কর্মসূচি বাবদ ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত আট বছরে দুই লাখ ২৯ হাজার ১৬৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৩ হাজার ৬৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা। হিজড়া ও বেদে সম্প্রদায়ের জন্য ৬০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। চা শ্রমিকদের জন্য জন্য অনুদান ১০ কোটি থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ কোটি করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪০ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২০১৯ সালের মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং গৃহায়ণ কর্মসূচিসহ অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে আরও ২ লাখ ৮০ হাজার পরিবার পুনর্বাসন করা হবে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ৫০ লাখ পরিবারকে প্রতি কেজি ১০ টাকা মূল্যে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে।’
শিক্ষা ব্যবস্থা
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। একটি যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১০ সালে আমরা মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কর্মসূচি শুরু করি। এ বছর চার কোটি ২৬ লাখ ৫৩ হাজার ৯২৯ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। গত আট বছরে সর্বমোট প্রায় ২২৫ কোটি ৪৩ লাখ এক হাজার ১২৮টি বই বিতরণ করা হয়েছে। বিশ্বে বিনামূল্যে বই বিতরণের এমন নজির নেই। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রথম শ্রেণী থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত এক কোটি ৭২ লাখ ৯৩ হাজার ১১৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তি বিতরণ করা হয়েছে। আমরা ২৬-হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছি। একইসঙ্গে এসব বিদ্যালয়ের এক লাখ ২০ হাজার শিক্ষকের চাকরি সরকারি করা হয়। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ১৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের প্রধান বলেন, ‘বিদ্যালয়বিহীন এক হাজার ১২৫টি গ্রামে নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ৩৬৫টি কলেজ সরকারি করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যেসব উপজেলায় সরকারি স্কুল বা কলেজ নেই, সেসব উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ করা হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ঝড়েপড়ার হার হ্রাস পেয়ছে। ২০০১-এ বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় গিয়ে শিক্ষার হার ৬৫ শতাংশ থেকে ৪৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছিল। বর্তমানে স্বাক্ষরতার হার ৭১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০০৯ সালে থেকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘একই সময়ে বেসরকারি খাতে ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে মোট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৯টি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯৬টি। চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে দু’টি নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আইন পাশ করা হয়েছে।’ যেসব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নেই, সেসব জেলায় একটি করে সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও অঙ্গীকার করেন তিনি।
কমিউনিটি ক্লিনিট
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ১৬ হাজার ৪৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করেছি। দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। ৬৪টি জেলা হাসপাতাল ও ৪২১টি উপজেলা হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমরা একটি যুগোপযোগী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করেছি। আট বছরে ১২ হাজার ৭২৮ জন সহকারী সার্জন এবং ১১৮জন ডেন্টাল সার্জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ১৩ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রায় সাড়ে ১২ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মাতৃমৃত্যু প্রতি হাজারে ১.৮ জনে এবং শিশু মৃত্যু ২৯ জনে হ্রাস পেয়েছে।’
যোগাযোগ খাত
সরকারপ্রধান বলেন, ‘৪৮টি বৃহৎ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকায় হাতিরঝিল প্রকল্প, কুড়িল-বিশ্বরোড বহুমুখী উড়াল সেতু, মিরপুর-বিমানবন্দর জিল্লুর রহমান উড়াল সেতু, বনানী ওভারপাস, মেয়র হানিফ উড়াল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। মেট্রোরেল নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন চালু হয়েছে। নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা সড়ক এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক ৪-লেনে উন্নীত করা হয়েছে। চন্দ্রা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার-লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম ৮ লেনের মহাসড়ক চালু করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় কাচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা এবং দ্বিতীয় গোমতি সেতু নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।’ তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকার রেলওয়েকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে দ্রুতগতিসম্পন্ন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছে। ইলেকট্রিক ট্রেন ও পাতাল ট্রেনের সম্ভ্যবতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।
ক্রীড়াঙ্গন
শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমরা পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়েকে পরাজিত করেছি। আমাদের মেয়েরা এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলে আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত নারী ফুটবল চাপিম্পয়নশিপ প্রতিযোগিতায় আমাদের মেয়েরা এই প্রথমবারের মতো রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। জাতীয় নারী ক্রিকেট দল জায়গা করে নিয়েছে আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে। শারীরিক ও মাসনিকভাবে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন ছেলেমেয়েরা ক্রীড়াক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্য দেখিয়ে চলেছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তারা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে।’
পররাষ্ট্রনীতি
সরকারপ্রধান আরো বলেন, ‘আমরা শান্তি ও সহঅবস্থানে বিশ্বাসী। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল বৈশিষ্ট্য “সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।” এই মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন পথ রচনায় সক্ষম হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে আমরা ভারতের সঙ্গে স্থলসীমানা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছি। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমারও শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছি। এর ফলে বিশাল সমুদ্র এলাকায় সমুদ্রসম্পদ আহরণের পথ সুগম হয়েছে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখবে। কক্সবাজারে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছি। সেখানে সি অ্যাকুরিয়াম তৈরি করা হবে।
সন্ত্রাস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন একটি গোষ্ঠী ইসলামের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করার অপচেষ্টা করছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম ধর্মের নামে যারা মানুষ হত্যা করে তারা ইসলামের বন্ধু নয়, শত্রু। ইসলাম কখনো মানুষ হত্যা সমর্থন করে না। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ তবে ধর্মান্ধ নয়। হাজার বছর ধরে এ দেশের মাটিতে সব ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শান্তিতে বসবাস করে আসছেন। যারা এই ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়, তাদের ঠাঁই বাংলার মাটিতে হবে না। আমি দেশের সকল ইমাম, মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, স্থানীয় মুরুব্বি, আনসার-ভিডিপি সদস্য এবং অভিভাবককে জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ করে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান, আপনাদের সন্তানের প্রতি নজর রাখুন। তাদের এমনভাবে পরিচালিত করুন, যাতে তারা ভুল পথে পা না বাড়ায়।’
নির্বাচন কমিশন
সরকারপ্রধান বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা আশা করি, সব রাজনৈতিক দল মহামান্য রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে গঠিত নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নেবে এবং দেশে গণতান্ত্রিক ধারাকে সমুন্নত রাখতে সহায়তা করবে।’