সাত খুন : এজলাসে ২৩ আসামি
নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের দুই মামলার রায় ঘোষণা উপলক্ষে আদালতের এজলাসে নেওয়া হয়েছে ২৩ আসামিকে। এর আগে বিচারকও প্রবেশ করেন এজলাসে। কিছুক্ষণের মধ্যে রায় ঘোষণা শুরু হবে।
আজ সোমবার সকাল সোয়া পৌনে ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দি থাকা ১৮ জনকে এবং গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা পাঁচ বন্দিসহ মোট ২৩ জনকে আদালতে নেওয়া হয়।
সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যে যে পাঁচ আসামিকে কাশিমপুর থেকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁরা হলেন—সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বরখাস্ত হওয়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট (চাকরিচ্যুত) কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, চাকরিচ্যুত কমান্ডার এম এম রানা, চাকরিচ্যুত মেজর আরিফ ও চাকরিচ্যুত ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে আনা আসামিরা হলেন—র্যাব সদস্য উপপরিদর্শক (এসআই) পুর্ণেন্দু বালা, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বজলুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ, হাবিলদার এমদাদুল হক ও নাসির উদ্দিন, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন ও বাবুল হাসান, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স করপোরাল রুহুল আমিন, সিপাহি আবু তৈয়ব, নুরুজ্জামান ও আসাদুজ্জামান নূর এবং নূর হোসেনের সহযোগী মোর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী ও আবুল বাশার।
নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে আজ এ রায় ঘোষণা করা হবে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার ৩৫ আসামির মধ্যে ২৩ জন কারাবন্দি আছেন। এঁদের মধ্যে ২১ জন নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দিয়েছেন। এ মামলায় মোট ১০৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২৩ জনের মধ্যে ১৮ জন বন্দি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে এবং বাকি পাঁচজন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে।
মামলার তদন্ত শেষ হওয়ার পর প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনায় তাঁর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়ার সুযোগ ছিল না। অন্যদিকে, তাঁর গাড়িচালক মিজানুর রহমান দীপু জবানবন্দি দিতে রাজি হননি।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা লিংক রোডের খানসাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের পাশ থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তাঁর সহযোগী সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিমকে অপহরণ করে র্যাব-১১।
পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের এবং ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি এবং চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল আলাদা দুটি মামলা করেন।