খুনি সন্দেহে গ্রেপ্তার দুই শিশুর জামিন
মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খুনি সন্দেহে গ্রেপ্তার দুই শিশুর জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের লালবাগ জোনের উপকমিশনার (ডিসি) ও কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারী আইনজীবী চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মো. আবদুল হালিম নিজেই শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী দুই শিশুকে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন দেন।
মামলার বিবরণ বিষয়ে আইনজীবী আবদুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘লাশের পরিচয় মেলেনি, খুনি সন্দেহে ২ শিশু গ্রেপ্তার’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছরের ২৪ নভেম্বর রিট করা হয়। গত ২৯ নভেম্বর আদালত রুলসহ ওই দুই শিশুর বয়স নির্ণয় করা হয়েছে কি-না, সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। সেই আদেশ অনুসারে ৪ জানুয়ারি লালবাগের ডিসি ও কামরাঙ্গীচরের ওসি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ১৫ জানুয়ারি সেই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত দুই শিশুকে হাজিরের নির্দেশ দেন।
আবদুল হালিম বলেন, ‘আদালতের রুল জারির পর পুলিশ ওই দুই শিশুর বয়স নির্ণয়ের ব্যবস্থা নেয়। এ কারণে ওই দুই কর্মকর্তাকে আদালতে হাজিরের আবেদন করি। আদালত এ সময় দুই শিশুকেই হাজির করাতে নির্দেশ দেন। আজ হাজিরের পর দুই শিশুকে জামিন দেওয়া হয়।’
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় দুই মাস আগে পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছিল। ১০ দিন পর লাশটি নিখোঁজ এক শিশুর দাবি করে শিশুটির পরিবার খুনের মামলা করে। খুনি সন্দেহে পুলিশ দুই শিশুকে গ্রেপ্তার করে। বিচারিক হাকিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে তাদের টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠান।
এর আগে অভিযোগকারী পরিবার ও পুলিশ অভিযুক্ত শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের স্বীকারোক্তি নেয়। এসবই ঘটে দুদিনের মধ্যে। আরো পরে জিজ্ঞাসাবাদের দুটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে তুলে দেন নিখোঁজ শিশুটির এক ফুফাতো বোন। লাশটির পরিচয় কিন্তু অজানাই আছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন বলছে, সে পানিতে ডুবে মারা গেছে। অভিযুক্ত দুই শিশু বলছে, মারধর করে তাদের মিথ্যা দায় স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছে। মামলাটি হয়েছে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানায়। পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে গত বছরের ১ অক্টোবর রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের কালুনগর খাল থেকে। বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম সেটা দাফন করে।