সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আর নেই
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আর নেই।
আজ রোববার ভোর রাত ৪টা ২৪ মিনিটে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এ সভাপতি রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বলে তাঁর একান্ত সহকারী কামরুল হক জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জের এ সংসদকে গতকাল রাত থেকে হাসপাতালেই লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিলো। তাঁর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করে শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
একান্ত সহকারী জানান, গত শুক্রবার ফুসফুসের সমস্যার জন্য রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে। শনিবার রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাঁকে প্রথমে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। পরে রাতেই তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ’
রাতে ল্যাবএইড হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সুনামগঞ্জের এ সংসদ সদস্যের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। পরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা হাসপাতালের বাইরে ভিড় করেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জন্ম ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামে। ছাত্র জীবনেই তিনি বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। হাওরাঞ্চলের ‘জাল যার জলা তার’ আন্দোলনে দীর্ঘদিন তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে সত্তরের নির্বাচনেও তিনি প্রদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
প্রবীণ এ পার্লামেন্টারিয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। পরে এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করে আইন পেশায় নিযুক্ত হন।
নব্বই দশকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর আগে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও একতা পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলমন্ত্রী নিযুক্ত হন। যদিও সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনার পর তিনি পদত্যাগ করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে তাঁকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিপরিষদে রাখেন। এর আগে ১৯৯৬ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংসদে সব সময় সরব এ সংসদ সদস্য একজন অভিজ্ঞ সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন।