সম্পর্কের সীমা নেই : জয়শঙ্কর
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘এ বৈঠক আরো প্রমাণ করে যে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের কোনো সীমা নেই।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই নেতার মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর শনিবার দিনের বিষয়গুলো নিয়ে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। এ সময় তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য ভারতীয় ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এর আগে দুই প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক আলোচনা ও একান্ত বৈঠক করেন। এদিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে দেশ দুটির মধ্যে নতুন রুটে বাস চলাচল উদ্বোধন করা হয়। আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন বলে বার্তা সংস্থা বাসস জানায়।
শীর্ষ বৈঠকের ফল সম্পর্কে ভারতের কূটনীতিক বলেন, এই বৈঠকে উপ-আঞ্চলিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক সহযোগিতা একটি নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে নেপাল ও ভুটানে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরাসরি রোড পাবে। অন্যদিকে ভারত তাদের বিচ্ছিন্ন উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যাওয়ার সুযোগ পাবে।
তিস্তা নদীর পানি বণ্টন ইস্যুতে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হয়েছে জানালেও কী আলোচনা হয়েছে—জানতে চাইলে ভারতীয় কূটনীতিক বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর মোদির বিবৃতির উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, ভারতের সরকারগুলোর সমর্থন নিয়ে আমি আস্থাশীল, আমরা তিস্তা ও ফেনী নদীর বিষয়ে একটি সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছাতে পারব।’
জয়শঙ্কর আরো বলেন, নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আগে অনুষ্ঠিত আলোচনায় বিষয়টি এসেছে। তাঁরা উভয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এ বিষয়ে যার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরকালে শেষ মুহূর্তে চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি নাকচ হয়ে যায়।
নিরাপত্তা হচ্ছে আলোচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেখানে উভয় দেশ বিগত বছরগুলোতে চমৎকার সহযোগিতা দেখিয়েছে। আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থন ব্যাপক আস্থার সৃষ্টি করেছে এবং সম্পর্ককে বর্তমান পর্যায়ে নিয়ে এসেছে বলেও উল্লেখ করেন জয়শঙ্কর।
ভারতীয় কূটনীতিক বলেন, শীর্ষ বৈঠকের ফলে ছয়টি চুক্তি ও প্রটোকল, ১৩টি সমঝোতা স্মারক, আধা-সরকারি সমঝোতা স্বাক্ষরিত এবং চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরুর জন্য উভয় পক্ষ স্থলসীমান্ত চুক্তি এলবিএ অনুমোদন দলিলপত্র বিনিময় করেছে। তবে এগুলো সম্পন্ন হতে আরো কিছু সময় লাগবে।