আদেশ পেলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : আইজিপি
গাইবান্ধায় সাঁওতালপল্লীর ঘটনায় উচ্চ আদালতের আদেশ পেলেই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশপ্রধান এ কথা বলেন।
এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, ‘হাইকোর্টের লিখিত আদেশ পেলেই কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ হাইকোর্টের আদেশ তো আমাদের প্রতিপালন করতেই হবে।’
সাঁওতালপল্লীর ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্তের বিষয়ে আইজিপি বলেন, ‘যেহেতু হাইকোর্ট নিজে তদন্ত কমিটি করেছে, কাজেই আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্ত সেভাবে করিনি। আমি গতকাল পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এই কমিটি কাজ করবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা ব্যবস্থা নেব।’
গত ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার সাহেবগঞ্জ আখ খামারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেখানে বসবাসরত প্রায় আড়াই হাজার সাঁওতাল বসতি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাঙালি, পুলিশ ও সাঁওতালদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন সাঁওতাল আহত হন। এ সময় নিহত হন তিন সাঁওতাল।
এ ছাড়া এ ঘটনায় মামলা করা হয় শতাধিক সাঁওতালের নামে। এতে আহত তিন সাঁওতালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায়ও আলাদা মামলা করা হয়।
এ ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সাঁওতালদের এলাকায় প্রবেশ করেছে পুলিশ সদস্যদের একটি দল। আশপাশে আরো অনেক গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। তখন দলটি একটি বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেই বাড়িটির চালা থেকে কিছু খড় খুলে নিয়ে তাতে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেন এক পুলিশ সদস্য। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন ওই দলে থাকা গোলাপি পোশাক পরিহিত আরেক ব্যক্তি। পরে শার্ট পরিহিত আরেক ব্যক্তি এসে তাঁদের সহযোগিতা করেন। কিছুক্ষণ পরই দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে বাড়িটি। আর পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখতে থাকেন অন্য পুলিশ সদস্যরা।
এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এই ভিডিও ও ছবি আদালতের নজরে আনা হলে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।