বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে এসআইকে হত্যার অভিযোগ পাঁচ বোনের
আকরাম হোসেনকে নামের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত বরখাস্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ও তাঁর কথিত প্রেমিকা বনানী বিনতে বশির বন্নি।
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন নিহত এসআই আকরামের পাঁচ বোন। বন্নি তাঁদের একমাত্র ভাইয়ের স্ত্রী।
একমাত্র ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন নিহত এসআই আকরামের বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনি। তিনি বলেন, তাঁদের একমাত্র ভাই ২০০১ সালে এসআই পদে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। ২০০৬ সালের ১৩ জানুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভগবাননগর গ্রামের বশির উদ্দিন বাদশার বড় মেয়ে বনানী বিনতে বশির বন্নির সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। বিয়ের দেড় বছর পর তাদের ঘরে একটি মেয়েসন্তান জন্ম নেয়।
রিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের আগে থেকেই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার ও বন্নির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরও সেই সম্পর্ক চলতে থাকে। এ নিয়ে আকরাম-বন্নির মধ্যে ঝগড়া হতো। ঘটনার কয়েক দিন আগে বন্নি ঢাকার বাসা ছেড়ে ঝিনাইদহের একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। ঘটনার দিন ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে যমুনা সেতু হয়ে এসআই আকরাম মোটরসাইকেল চড়ে ঝিনাইদহে আসার পথে বড়দা নামক স্থানে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইদহে ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত হওয়ার ১৭ দিন পর ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
এ ঘটনায় সেই সময় শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাশেম খান মামলা নেননি। বরং সড়ক দুর্ঘটনায় আকরাম নিহত হয়েছেন বলে বন্নি যে অপমৃত্যুর মামলা করেন তা গ্রহণ করা হয়।
২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি ঝিনাইদহের আদালতে রিনি বাদী হয়ে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের তৎকালীন পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন সহযোগিতা করেননি বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।
এ হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নিহত এসআই আকরাম হোসেনের পাঁচ বোন। রিনি ছাড়া অন্য বোনরা হলেন রেহেনা খাতুন, ফেরদেৌস আরা, সাহানাজ পারভীন রিপা ও শামীমা নাসরিন মুক্তি।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মাগুরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বন্নি দাবি করেছিলেন, এসআই আকরাম হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এ সময় বাবুল আক্তারের বাবা সাবেক ওসি আবদুল ওয়াদুদ উপস্থিত ছিলেন।
গত ৫ জুন চট্টগ্রামে এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু নিহত হন। মোটরসাইকেলে করে আসা তিন দুর্বৃত্ত মাহমুদা খানম মিতুকে প্রথমে ছুরিকাঘাত ও পরে মাথায় গুলি করে হত্যা করে। সেদিন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ের দিকে যাওয়ার পর এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেছেন, তাঁর মেয়ে হত্যার সঙ্গে বাবুল আক্তারের হাত থাকতে পারে।