ঘুমন্ত পরিবারের ওপর হামলা, ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৫
ঝালকাঠির রাজাপুরে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় এক পরিবারের বসতঘরে হামলা ও দখলের অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবিব রুবেলসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ছয় নারীসহ সাতজন আহত হয়েছেন। আহতদের রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আজ রোববার ভোর ৪টার দিকে রাজাপুর ডিগ্রি কলেজের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন—সাহেরা বেগম (৪৬), শারমিন আক্তার (৩০), কবিতা (২৭), তাসলিমা (৩০), সৈয়দ মান্নান (৬০), সালেহা বেগম (৬০) ও আম্বিয়া বেগম (৬০)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবিব রুবেল (৩২), তাঁর মা ছাহেরা বেগম (৪৫), আবু ছালেহ (২৮), নজরুল ইসলাম (২৮) ও শারমিন আক্তার (৩০)।
আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোর ৪টার দিকে রাজাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল স্থানীয় ডিগ্রি কলেজের পশ্চিম পাশে ফারুক সিকদারের বসতঘরে হামলা চালায়। এ সময় ওই পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজন মুখোশ পরা ছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা বসতঘরে ভাংচুর চালিয়ে এবং লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। হামলায় পরিবারের সাতজন আহত হন। হামলাকারীরা ঘরের মূল্যবান মালামাল লুট করে নেয় বলেও ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাজাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ পাঁচজনকে আটক করে।
রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহত সালেহা বেগম অভিযোগ করেন, ‘রাতে আমরা পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুমন্ত অবস্থায় ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেল ও তার পরিবারের লোকজন এবং কয়েকজন মুখোশধারী সন্ত্রাসী আমাদের বসতঘরে হামলা চালায়। আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তারা ঘরের ভেতরে ঢুকে আমাদের লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আমাদের চিৎকার শুনে কেউ হয়তো থানায় ফোন করে। পুলিশ এসে হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে ধরে ফেলতে সক্ষম হয়।’
রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল খায়ের মাহামুদ রাসেল বলেন, আহতদের মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে। সকাল থেকেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
রাজাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুন অর রশীদ জানান, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ৪টার দিকে ডিগ্রি কলেজ এলাকার ফারুক সিকদারের বসতঘর থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
রাজাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বাপ্পি মৃধা বলেন, এটা একটি সম্পূর্ণ পারিবারিক ঘটনা। এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই।