সবার অভিযোগ শুনছি, আমারটাও বলছি : সাক্কু
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘আমি হেঁটে হেঁটে গণসংযোগ করি। সবার অভাব-অভিযোগ শুনি। আমারটাও আমি বলি। আমি সাড়া পাচ্ছি।’
আজ মঙ্গলবার নগরীর কোটবাড়ি, কালিরবাজার ও দৌলতপুর এলাকায় গণসংযোগ করেন মনিরুল হক সাক্বু। এরই এক ফাঁকে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সাক্কু বলেন, ‘কোথায় বেশি কাজ হয়েছে, কোথায় কম কাজ হয়েছে তা শুনছি। কিছু কাজ প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে তারা তা জানে না। সেগুলো আমি জানিয়েছি।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মনিরুল হক। তিনি বলেন, ‘প্যান্ডেল দিয়ে তারা মিটিং করছে। তা করার কথা না। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে।’
এদিকে আজও বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় নেতারা সাক্কুকে জয়ী করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল কুমিল্লাস্থ ফেনী সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘কুমিল্লায় বিএনপি প্রার্থী জনপ্রিয়, প্রতীক জনপ্রিয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বিএনপি জনপ্রিয়, এখানে দল ঐক্যবদ্ধ, তাই কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত।’ তিনি আরো বলেন, বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত ভেবে ক্ষমতাসীন দল কুমিল্লায় সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করছে। কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না, কুমিল্লার মানুষ ৩০ মার্চ নির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কুকে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।’
সভায় অন্যানের মধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, আবদুল আউয়াল খান, সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব এবং ফেনী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার বক্তব্য রাখেন।
রেইসকোর্স, কাঠেরপুল এলাকায় গণসংযোগে অংশ নেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীর অভিযোগে সাড়া দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু কোনো নির্বাচন প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আমরা তখনই বলতে পারব, যখন নির্বাচন প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে যাবে। এখনো বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিএনপি কর্মীদের বাধা দিচ্ছে। বিএনপির কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তারপরও আমরা নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যতটুকু দেখেছি জনগণের বিপুল সমর্থন ধানের শীষের পক্ষে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে ধানের শীষের প্রার্থী জিতবে। প্রার্থী অভিযোগ দিচ্ছেন। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি কী পদেক্ষপ নেয় তা দেখার। সব বিষয়ে যে প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে তা কিন্তু নয়।’
এ সময় বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন ভূইয়া শিশির, একরামুল হক বিপ্লব, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা জামাল উদ্দিন মিলন, জিয়াউল হায়দার পলাশ, গোলাম মোস্তফা কুমিল্লা জেলা বিএনপি নেতা মোস্তফা জামান, তোফাজ্জল হোসেন বেলাল উপস্থিত ছিলেন।
ল্যাবরেটরি স্কুল, পলিটেকনিক কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ এলাকায় গণসংযোগে অংশ নেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক। তিনি বলেন, ‘হামলা, হুমকি এবং মামলার ভয় দেখিয়ে কুমিল্লায় সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করা হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘কুমিল্লায় অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে রেকর্ড সংখ্যক ভোট পেয়ে বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বিজয়ী হবে। এটা নিশ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগ বিশৃঙ্খলা, অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’ এ সময় তাঁর সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতা হান্নান, মোতালেব, যুবদল নেতা শাহ আলম ও ছাত্রদল নেতা রেজাউল করিমসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
টমছম ব্রিজ, হালুয়াপাড়া, ইপিজেড গেট এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু।
পথসভায় কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘শ্রমিক-কর্মচারী, মেহনতী মানুষের বন্ধু মনিরুল হক সাক্কুকে ভোট দিয়ে নগরীর উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে।’ শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি খালেদা জিয়ার প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুকে ভোট দিয়ে গণতন্ত্রে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানান। এ সময় জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাধন দেব, মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি আমিরুজ্জামান আমির উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন বিএনপি কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ও মোবাশ্বের আলম ভূইয়া, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল, কুমিল্লা জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ওমর ফারুক, যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির, আতিকুর রহমান, জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জিসাস) মহাসচিব আবুল হাসেম রানা।