অভিযানে ২ জঙ্গি নিহত, জীবিত একাধিক : সেনাবাহিনী
সিলেটে দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় শিববাড়িতে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানে অন্তত ২ ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছেন এবং ভেতরে একাধিক ‘জঙ্গি’ অবস্থান করছেন বলে সেনাবাহিনীর ব্রিফিংয়ে দাবি করা হয়েছে।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার কিছু পরে পাঠানপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে সেনাবাহিনীর পক্ষে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান ব্রিফিং করেন।
এ সময় সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘নিহত দুজন পুরুষ। ভবনের নিচ তলায় দুজনকে দেখে কমান্ডো বাহিনীর সদস্যরা প্রথমে গুলি করে। তারা পড়ে যায়। এরমধ্যেই একজন আবার নিজের শরীরে বাঁধা আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। ধারণা করছি, ভেতরে আরো একাধিক জঙ্গি রয়েছে।’
‘অভিযান চলছে’ উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর এ কর্মকর্তা জানান, তাঁরা এ অভিযান শেষ করেই তবে যাবেন। তবে, এটা কখন শেষ হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি।
আজ অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য আহত হননি। তবে ‘জঙ্গিরা’ নানা কৌশল অবলম্বন করায় অভিযান বেশ ঝুঁকি নিয়েই পরিচালনা করতে হচ্ছে বলে সেনাবাহিনীর ব্রিফিংয়ে দাবি করা হয়।
ব্রিগেডিয়ার ফখরুল আহসান বলেন, ‘ভবন থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে আসার পর ভবনটিতে জঙ্গিরা আনাগোনা করছেন। তাঁরা নিচতলায় অবস্থান করলেও পুরো ভবনই তাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তবে বিস্ফোরণে এখনো ভবনের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযানের প্রয়োজনে আতিয়া মহলের পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ভেঙে ফেলেছে।’
সেনাবাহিনী ধারণা করছে, ভেতরে থাকা জঙ্গিদের কাছে ছোট অস্ত্র, বোমার সরঞ্জাম ও গ্রেনেড রয়েছে। তারা সেগুলো দিয়েই সেনাবাহিনীকে জবাব দিচ্ছে।
জঙ্গিরা কোন গোষ্ঠীর এ ধরনের কোনো আলামত পাওয়া গেছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান বলেন, ‘সেনাবাহিনী এখানে একটি বিশেষ কাজ নিয়ে এসেছে। এটা পুলিশ ও র্যাবের গোয়েন্দারা বা যারা এটা পরবর্তী সময়ে তদন্ত করবেন তারা ভালো বলতে পারবেন।’
ভিতরে থাকা জঙ্গিদের মধ্যে কোনো নারী সদস্য আছে কিনা- জানতে চাইলে সেনা কর্মকর্তা জানান, ‘মহিলা আছে কিনা আমরা এখনো বলতে পারছি না। পুরো অভিযান শেষ হওয়ার পরই এ ব্যাপারে সব ধরনের তথ্য আপনাদের দিতে পারবো।
আজ রোববার সকাল থেকে পুনরায় অভিযানে নামে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা। থেমে থেমে ১০ থেকে ১৫ বার বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা গেছে। এতে কখনো কখনো পুরো এলাকা কেঁপে উঠছে।
ঢাকা-চট্টগ্রামের অভিযানের পর আটক জঙ্গিদের দেওয়া তথ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে শিববাড়ি এলাকার ‘অতিয়া মহল’ নামে একটি বাড়ির পাশাপাশি চারতলা ও পাঁচতলা ভবন ঘিরে রাখেন সিলেটের স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ঢাকা থেকে যাওয়া কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা। শুক্রবার বিকেলে এর সঙ্গে যোগ দেয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
শনিবার সকাল থেকে শুরু হয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’। এ অভিযান চলাকালেই গতকাল সন্ধ্যার পর পর দুটি বোমা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হন।