জঙ্গিদের ঠাঁই হবে না, যা দরকার করা হবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও জঙ্গিদের ঠাঁই হবে না। এর জন্য যা করা দরকার, সরকার তাই করবে।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন না করে বিএনপি প্রমাণ করেছে তারা পাকিস্তানের পক্ষে।
স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা আক্ষেপ করেন স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে প্রশ্ন ওঠায়। এটিকে দুর্ভাগ্য হিসেবে উল্লেখ করে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা না করার নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ে স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে, তারপরও যারা এটি মানছে না তারা কেমন প্রকৃতির মানুষ তা নিয়ে প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রায় যারা মানে না, তারপরও যারা বলেই যায় এদের উদ্দেশ্যটা কী? আমি একটাই বলতে পারি তাদের কথা আপনার এভাবে নেবেন যে পাগলে কি না কয় ছাগলে কি না খায়। একটি রাজনৈতিক দল অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াতগোষ্ঠী তারা ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন করল না। এটাই বিএনপি-জামায়াত বুঝিয়ে দিল যে তারা বাংলার জনগণের সঙ্গে নেই। তারা আছে আল বদর, রাজাকার, আল-শামস ওই হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে। এটাই স্পষ্ট বাংলাদেশের মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের কিছু মানুষ সবসময় দেশের ভেতর থেকেই দেশের ক্ষতি করছে। চলমান জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব মানুষের সমবেদনায় মদদ পাচ্ছে জঙ্গিরা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক দিকে সিলেটে জঙ্গিবিরোধী অভিযান। সেই অভিযান চালাচ্ছে। সারাক্ষণ সেটা মনিটর করতে হচ্ছে। আর অপর দিকে শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে গেইম দুইটাই একসঙ্গে দেখতে হচ্ছে সারাক্ষণ টেনশন। বুঝতে পারেন কী অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। এক দিকে আনন্দের খবর আরেক দিকে সেই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান। এটাই আমাদের জীবন। এইভাবে আমাদের চলতে হবে। তবে এই জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ চাই না। আর বাংলাদেশে জঙ্গিদের কোনো ঠাঁই হবে না। এ জন্য যা যা করণীয় তা আমরা করব।’
সেই সঙ্গে অভিভাবকসহ সবার প্রতি প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানান, কেউ জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কি না, তা খুঁজে বের করে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার।
আলোচনা সভায় সূচনা বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টাপরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজুলল করিম এমপি, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান, নারী নেত্রী সিম্মি আহমেদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান ও শাহে আলম মুরাদ।
সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
আলোচনার শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব এবং ১৫ আগস্টের সব শহীদ, শহীদ জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদসহ সব গণআন্দোলনের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতা, ১৪-দলীয় নেতা এবং সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।