আতিয়া মহলে এখনো বিস্ফোরক খুঁজছে পুলিশ
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে সেনা অভিযান সমাপ্ত ঘোষণার পরও বিস্ফোরক খুঁজছে পুলিশ। এলাকাটিতে পঞ্চম দিনের মতো জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা।
মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল এনটিভিকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
ওসি জানান, ঢাকা থেকে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে। দুপুরে ঘটনাস্থলে যাবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আলামত সংগ্রহকারী দল।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানান, শিববাড়ি এলাকায় এখনো গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়নি, তবে বিদ্যুৎ রয়েছে। আতিয়া মহলে বিস্ফোরক থাকতে পারে ধারণা করে মানুষের যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো সময় লাগবে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’-এর সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে আতিয়া মহলের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয় পুলিশের কাছে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অভিযানের মুখপাত্র সেনা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।
সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, অভিযান শেষ হলেও ভবনটিতে আরো বিস্ফোরক থাকার আশঙ্কা আছে। এ কারণে এই ভবন ও আশপাশের এলাকাগুলো এখনো ঝুঁকিপূর্ণ।
অভিযানের পর শিববাড়ি এলাকার পরিস্থিতি জানতে চাইলে স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রাজু বলেন, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে তাঁদের সময় কাটছে। এর মধ্যে গ্যাস না থাকায় পরিবার নিয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার জেদান আল মুসা জানান, আতিয়া মহলের ভেতর থাকা আত্মঘাতী বিস্ফোরকসংবলিত পোশাক পরা লাশ দুটি বিস্ফোরণে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সিআইডি আলামত সংগ্রহের পর অংশবিশেষ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। সেখানে লাশগুলোর ডিএনএ পরীক্ষাও করা হবে।
অভিযানের সারসংক্ষেপ : জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আতিয়া মহল ঘেরাও করে পুলিশ। সকালে বাড়ি থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এর পর সেই অভিযানে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াট, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (র্যাব) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শনিবার সকাল থেকে বাড়িটিতে অভিযানের দায়িত্ব নেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে আতিয়া মহলের দায়িত্ব পুলিশের কাছে দেওয়া হয়।
অভিযানে বাড়ি থেকে ৭৮ বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়। এতে চার জঙ্গি নিহত হয়। আর বাড়ির বাইরে বিস্ফোরণে পুলিশের দুই সদস্যসহ ছয়জন নিহত হন। গুরুতর আহত হন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) দুই সদস্য।