ব্যারিস্টার ফখরুলের জামিন স্থগিত
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেন।
ওই দিন পুনরায় এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
সাজার বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার ফখরুলকে গত ৪ এপ্রিল এক বছরের জন্য জামিন দেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার ফখরুলের আপিল গ্রহণের পর থেকে শুনানি চলছে হাইকোর্টে।
আদালতে ব্যারিস্টার ফখরুলের জামিনের আবেদনের পক্ষে ছিলেন জয়নুল আবেদীন ও মিজানুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ।
গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের খসড়া ফাঁসের মামলার রায় দেন বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম।
রায়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার এ কে এম ফখরুল ইসলামকে ১০ বছর এবং ব্যবস্থাপক মাহবুবুল হাসান, ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জুনিয়র মেহেদী হাসান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী ফারুক আহমেদ ও নয়ন আলীকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্য দুই আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী খালাস পান।
ব্যারিস্টার ফখরুলকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস এবং অন্য চারজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়।
এদিকে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ গত বছরের ২২ নভেম্বর সাত বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মাহবুবুল হাসানের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
একই সঙ্গে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় তার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে খালাসের রায় বাতিল করে সুবিধাজনক সাজা দেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ আদেশ পাওয়ার ছয় সপ্তাহের মধ্যে তাদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেন আদালত।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তবে রায়ের আগেই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্য এবং আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তাঁরা ‘রায়ের খসড়া কপি’ সাংবাদিকদের দেখান এবং স্পাইরাল বাইন্ডিং করা কপি নিয়ে ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে যান।
রায় ঘোষণার পরদিন ২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় জিডি করেন, যা পরে মামলায় রূপান্তরিত হয়।