অভিনেত্রী আফসানা মিমির বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্র ‘রান’ নির্মাণের সময় বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) বিভিন্ন স্থাপনা ভাড়া বাবদ চার লাখ ৫২ হাজার টাকা না দেওয়ায় অভিনেত্রী আফসানা মিমির বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী।
আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বিকেএসপির আইনবিষয়ক উপদেষ্টা মুনজুর আলম ডাকযোগে রেজিস্ট্রি করে নোটিশটি পাঠান।
নোটিশে টাকা পরিশোধে আফসানা মিমিকে ৩০ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
আইনি নোটিশ থেকে জানা যায়, অভিনেত্রী আফসানা মিমি তাঁর প্রোডাকশন হাউস কৃষ্ণচূড়া লিমিটেডের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘রান’ চলচ্চিত্র নির্মাণকাজে ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিকেএসপির ২ নম্বর খেলার মাঠ, ড্রেসিং রুম, ড্রাইভিং প্যাড, সুইমিং পুল, লাইব্রেরি, ওয়েট জিম, ইনডোর ক্রিকেট ডোর, ক্যাফেটেরিয়া, ইন্টারন্যাশনাল হোস্টেলের আটটি কক্ষ, ভিআইপি কক্ষ ও ট্রেইনিজ হোস্টেলের ১০টি কক্ষ ব্যবহার করেছেন। এর বিল বাবদ চার লাখ ৫২ হাজার টাকা কৃষ্ণচূড়ার কাছে বিকেএসপি পাবে।
এই পাওনা টাকা চেয়ে আফসানা মিমিকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এর পরও তিনি তা পরিশোধ করেননি। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আফসানা মিমির বক্তব্য
আইনি নোটিশের বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিভি অনলাইনকে ইমেইলে জবাব দেন আফসানা মিমি। মেইলে লিখিত বক্তব্যে মিমি বলেন, “২০১২ সালে ‘রান’ নামের একটি সিনেমা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, সৌভাগ্যক্রমে যার দায়িত্বে আমি ছিলাম। ২০১৩ সালে ‘রান’ নামের ওই সিনেমাটির কাজ স্থগিত হয়ে যায়। ওই সিনেমাটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ছিল ‘কৃষ্ণচূড়া’।”
“কৃষ্ণচূড়া নামের প্রতিষ্ঠানটি একসময় আমার হাতে নির্মিত হলেও সিনেমাটির প্রযোজনাকে কেন্দ্র করে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কাছে কৃষ্ণচূড়ার মালিকানা হস্তান্তর করা হয়। এখন আর আইনতভাবে প্রতিষ্ঠানটি আমার দায়িত্বে নেই। ‘রান’ সিনেমার শুটিংয়ের জন্য বিকেএসপিতে আমরা লোকেশন দেখি। ‘রান’-এর গল্প মুক্তিযুদ্ধ ও ক্রিকেটবিষয়ক হওয়ায় শুটিংয়ের জন্য বিকেএসপির লোকেশন প্রয়োজন ছিল। শুটিংয়ের জন্য তৎকালীন ডিজি, বিকেএসপি আমাদেরকে অনুমতি দেন এবং ভাড়া ইত্যাদির বিষয়টিও নির্ধারিত হয়। কিন্তু সিনেমার কাজ স্থগিত হয়ে যাওয়ায় আমরা সেখানে কোনো শুটিং করিনি।
‘পরবর্তী সময়ে বিকেএসপি থেকে আমাদেরকে জানানো হয় যে, আমাদের কাছে বিলের কিছু অর্থ তাদের প্রাপ্য হয়েছে, কারণ আমরা তাদের কিছু রুম বুক করে রেখেছিলাম। আমিও তার প্রেক্ষিতে একটি আবেদন পাঠাই যে আমরা যেহেতু কোনো কাজই করিনি এবং যদি কোনো বিল তারা নির্ধারণ করেও থাকেন তা যেন মওকুফ করে দেওয়া হয়। কারণ আমাদের সিনেমার কাজটিই স্থগিত হয়ে গিয়েছে। তারপর আর কোনো কিছু বিকেএসপি থেকে আমাদেরকে জানানো হয়নি।”
মিমির দাবি, ‘সম্প্রতি মাসখানেক আগে আমাদের সিনেমার একজন সহকর্মী আমাকে জানান যে, বিকেএসপির প্রতিনিধি মিস্টার অলিক বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান। আমি সাথে সাথে বিকেএসপিতে মিস্টার অলিককে ফোন করি এবং জানাই যে আমি বর্তমান ডিজি, বিকেএসপির সাথে দেখা করে একটি সমাধানে আসতে চাই যে, বিকেএসপি কতৃর্পক্ষ বিল মওকুফ করবেন কারণ আমরা কোনো শুটিং করিনি। অথবা যদি তারা কোনো বিল দাবি করেন তাহলে আমি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি অবহিত করব। কারণ অনেক সময় পার হয়ে গেছে ইতোমধ্যে।’
‘এ ছাড়া অলিক জানান যে তিনি ডিজি, বিকেএসপির অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আমাকে জানাবেন। কিন্তু বিকেএসপির পক্ষ থেকে আমার সাথে আর কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।’
মিমি আরো বলেন, ‘আজ হঠাৎ করেই জানতে পারলাম যে আমার নামে উকিল নোটিশ ইস্যু হয়েছে এবং মামলা করা হচ্ছে। অথচ আমি নিজে এখনো পর্যন্ত কোনো উকিল নোটিশ রিসিভ করিনি। বর্তমান ডিজি, বিকেএসপি বলছেন যে যেহেতু আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে গেছে তাই এখন আর তাদের কিছু করার নেই। এইটা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বিষয়।’