রমনা বোমা হামলার বিচার নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সন্দেহ
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, নববর্ষের সময় রমনা বটমূলে বোমা হামলার বিচার কবে নাগাদ শেষ হবে তা এখানো বলতে পারছি না। এ মামলার বিচারকাজ আদৌ শেষ হবে কি না, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের আলাপকালে মাহবুবে আলম এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রের প্রধান আইনজীবী বলেন, ফৌজদারি মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে হয়। অন্যথায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় না। এ মামলা এত বছর ধরে ঝুলে আছে যে, আদৌ কবে নাগাদ তা শেষ হবে এর কোনো ঠিক নেই।
‘এ মামলার বিচার শেষ হবে কি না তা নিয়েও আমার সন্দেহ রয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নানকে এরই মধ্যে অন্য একটি মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। অন্য আসামিদের বিচার চলমান রয়েছে।’
এ দিন পয়লা বৈশাখ নিয়েও কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ। বাংলার মানুষ আবহমানকাল থেকে উৎসবটি পালন করে আসছে। আগে শুধু রমনা বটমূলে এ উৎসবটি পালন করা হতো। এখন রাজধানীর শাহবাগ, ধানমণ্ডি, বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে এ উৎসব হয়।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রাজধানীর রমনার বটমূলে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাতে ১০ জন নিহত হন। আহত হন আরো অনেকে। ওই ঘটনার ১৪ বছর পর ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দায়রা জজ আদালত মুফতি হান্নানসহ আট জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন হুজি নেতা মুফতি আবদুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মাওলানা আকবর হোসাইন ও আরিফ হাসান। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন পলাতক। এ ছাড়া এ মামলায় হুজির আরো ছয় জঙ্গিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য এই মামলার নথি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি মুফতি হান্নানসহ কারাবন্দি আসামিরা আপিল দায়ের করেন। আপিলে তাঁরা মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় বাতিল চান। বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এসব ডেথ রেফারেন্স ও আপিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় মামলার পেপার বুক করার নির্দেশ দেন। এরপর এই মামলার পেপার বুক প্রস্তুত করা হয়।
পেপার বুক প্রস্তুতের পরে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে পাঠান প্রধান বিচারপতি।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, মামলার তদন্ত ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি হতে বিচারিক আদালতের ১৪ বছর অতিবাহিত হয়েছে। সে তুলনায় হাইকোর্টের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হলো।