‘ধর্মান্ধ’ গোষ্ঠীর বিপক্ষে মাঠে নামছেন সংস্কৃতিকর্মীরা
দেশের ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ ও ‘ধর্মান্ধ’ গোষ্ঠীর বিপক্ষে মাঠে নামছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। আগামী ২০ মে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত জাতীয় কনভেনশন থেকে রাজপথে নামার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে ইতিমধ্যে দেশের ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি দিয়েছে। ইসলামপন্থী এই সংগঠনগুলোর দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। এমন বাস্তবতায় ২০ মে জাতীয় কনভেনশন করছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোটের সভাপতি বলেন, ভাস্কর্য রক্ষাসহ সব ধরনের প্রগতিশীল চিন্তার বিকাশে অন্তরায় প্রতিরোধে সারা দেশের সংস্কৃতিকর্মীরা রাজপথে নামবে। জাতীয় কনভেনশনে সারা দেশের সংস্কৃতিকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে লাগাতার কর্মসূচিতে যাবে সংস্কৃতিকর্মীরা।
গোলাম কুদ্দুছ আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আধুনিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর লড়াইয়ের প্রত্যয়ে অতীতের মতো সরব থাকবে সংস্কৃতিকর্মীরা।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ও নাট্যব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, ‘আমরা শুধু সংস্কৃতিকর্মীদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, বিষয়টা এমন নয়। এখানে শিশু, নারী ও সামাজিক সংগঠনকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমরা মনে করি ধর্মান্ধ, মৌলবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো প্রকার সমঝোতায় আসা ঠিক হবে না। তাদের সঙ্গে কোনো আপস নয়।’
‘সারা দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষদের নিয়ে এ কনভেনশন করছি। আশা করছি সফল হব।’
জোটের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমরা বাধ্য হয়ে এ কাজটি করতে যাচ্ছি। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। এত মানুষের শ্রমে-ঘামে যখন একটি রাষ্ট্র এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে, কিছু প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এটাকে পিছিয়ে দিতে পারে না।’
‘আমরা তা হতে দেব না। এই কনভেনশনের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের অধিকার নিশ্চিত করব।’
ভাস্কর্য সরাতে একাট্টা ইসলামপন্থীরা
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরাতে গত কিছু দিন ধরে জোর দাবি জানিয়ে আসছে ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন। যেকোনো মূল্যে ভাস্কর্য সরাতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে সংগঠনগুলো।
এ বিষয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘অনতিবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্য সরিয়ে নিতে হবে এবং হেফাজতের কর্মীদের নামে ২০১৩ সালের ৫ মে ভাস্কর্য ভাঙার অপরাধে যে মামলা রয়েছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে।'
ভাস্কর্য অপসারণ না হলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলেও মন্তব্য করেন ফয়জুল্লাহ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির রেজাউল করিম শুক্রবার বিকেলে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে রমজানের আগে ভাস্কর্য অপসারণের আহ্বান জানান। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ মনে করেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সামনে এ রকম ভাস্কর্য অপ্রত্যাশিত। ইসলাম পরিপন্থী এসব ভাস্কর্য সরাতে যারা আন্দোলন করবে, তাদের সঙ্গে আমাদের ইতিবাচক দৃষ্টি থাকবে।’