রাষ্ট্রের উপহার আত্মসাতের মামলায় এরশাদ খালাস
রাষ্ট্রীয় উপহার আত্মসাতের মামলায় তিন বছরের সাজা বাতিল করে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সাজা বাতিলে এরশাদের করা আপিল, সাজা বৃদ্ধি করতে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল এবং দুদকের করা আপিলের শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি রুহুল কুদ্দুছ ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেলা ১১টা থেকে রায় পড়া শুরু করেন বিচারকরা।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল মামলার শুনানি শেষে রায় ঘোষণা জন্য আজ ৯ মে দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে এরশাদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
এ বিষয়ে খুরশীদ আলম খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ১৯৯২ সালে এরশাদকে এ মামলায় তিন বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে গত ২৩ মার্চ এ মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ থাকলেও হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেননি।
ওইদিন রায়ের আগে আদালত বলেন, এরশাদের সাজা বৃদ্ধি করতে সরকার পক্ষেরও একটি আবেদন থেকে গেছে। এই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে একসঙ্গে রায় ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়া রায় ঘোষণা করাটা হবে ন্যায়বিচার পরিপন্থী। পরে এ মামলার এরশাদের আপিল, দুদকের পক্ষভুক্ত আপিল ও সাজা বৃদ্ধি করতে সরকারপক্ষের আপিল শুনানি করতে বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
দীর্ঘদিন শুনানি শেষে আজ রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর দুর্নীতি মামলায় সাজার বিরুদ্ধে এরশাদের আপিল শুনানি শুরু হয়। দীর্ঘ ২৪ বছর পর এরশাদের সাজার বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরুর উদ্যোগ নেয় দুদক।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এরশাদ। এ সময় বিভিন্ন স্থান থেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে পাওয়া উপহার তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেননি বলে অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯৯১ সালের ৮ জানুয়ারি তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোর উপপরিচালক সালেহ উদ্দিন আহমেদ রাজধানীর সেনানিবাস থানায় এরশাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
মামলায় এক কোটি ৯০ লাখ ৮১ হাজার ৫৬৫ টাকা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়।
ওই মামলায় ১৯৯২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের রায়ে এরশাদকে তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই পরিমাণ অর্থ ও একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে একই বছর হাইকোর্টে নিম্ন আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন এরশাদ। আদালত আপিল গ্রহণ করে নিম্ন আদালতের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন।
একই সঙ্গে জজ আদালতের নথিও তলব করা হয়। এরপর ২০১২ সালের ২৬ জুন সাজার বিরুদ্ধে এরশাদের আপিলে পক্ষভুক্ত হয় দুদক।