অস্ত্র জমা দিয়েছিলেন সাফাতরা, প্রমাণ নেই হোটেলে
রাজধানীর বনানীর রেইন ট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলার আসামি সাফাত আহমেদসহ অন্যরা হোটেলের ডেস্কে অস্ত্র রেখে ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন। আজ শনিবার সাংবাদিকদের সামনে এমন দাবি করেছেন রেইন ট্রি হোটেলের এক্সিকিউটিভ (অপারেশন) ফারজানা আরা রিমি। তবে এই সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ তাঁদের কাছে নেই বলে জানিয়েছেন।
আজ বেলা ১১টার দিকে রেইন ট্রি হোটেলে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল। গুলশান বিভাগের পরিদর্শক ওবায়দুল কবিরের নেতৃত্বে চার সদস্যের দল এই অভিযান চালায়। তবে হোটেলে কোনো মাদক ও অ্যালকোহল জাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
অভিযান শেষে হোটেলের কর্মকর্তা ফারজানা আরা রিমি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা হোটেলে কোনো মদের বারের সন্ধান পাননি। তবে এখানে জুসের বার রয়েছে।
গত ২৮ মার্চের ওই ঘটনা সম্পর্কে ফারজানা আরা রিমি বলেন, গত ৯ এপ্রিল হোটেল রেইন ট্রি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। ওই সময়ের আগে হোটেলের অনেক কিছুই সাজানো-গোছানো ছিল না।
২৮ মার্চের ওই রাতে দুই তরুণীকে অস্ত্রের ভয় দেখানো হয়েছিল-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হোটেলের ওই কর্মকর্তা বলেন, ৯ এপ্রিলের আগে হোটেলের দরজায় স্ক্যানার মেশিনে সংযোগ দেওয়া ছিল না। তাই সাফাত, সাকিফ ও আশরাফসহ অন্যরা হোটেলের ডেস্কে অস্ত্র জমা রেখে ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন। তাই অস্ত্রের মুখে দুই তরুণীদের ভয় দেখানোর অভিযোগ মিথ্যা। তবে হোটেলে অস্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো প্রমাণ নেই বলেও জানান তিনি।
ঘটনার দিন কক্ষে দুই তরুণীর অনেক চিৎকার করেছিল কিন্তু হোটেলের স্টাফ এগিয়ে আসেনি কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে ফারজানা আরা বলেন, হোটেলের প্রতিটি কক্ষই সাউন্ড প্রুফ করা। তাই কক্ষের ভেতরের শব্দ বাইরে থেকে শুনতে পাওয়া সম্ভব নয়।
জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় মামলা করেন এক ছাত্রী। মামলার আসামিরা হলেন আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তাঁর বান্ধবী ও বন্ধু শাহরিয়ারকে আটক রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। বাদী ও তাঁর বান্ধবীকে জোর করে ঘরে নিয়ে যান আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ এবং বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
গত বৃহস্পতিবার সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাফাতকে ছয়দিন এবং সাকিফকে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।