পুলিশের গাফিলতির প্রমাণ নেই, আছে ত্রুটি-বিচ্যুতি
রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের গাফিলতির কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তবে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
আজ সোমবার দুপুরে ডিএমপি সদর দপ্তরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি আরো বলেন, এসব ত্রুটি বিচ্যুতির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের তলব করা হবে।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, বনানীর ঘটনায় মামলা নিতে কেন দেরি হয়েছিল ও দায়িত্ব পালনে পুলিশের কোনো অবহেলা ছিল কি না সে বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গতকাল রোববার কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী বনানী থানা পুলিশের গাফিলতি নয় তবে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেছে। আর সে কারণেই তাঁদের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলব করা হবে। তিনি বলেন, আদালত যখন কাউকে শাস্তি দেন তখন তাঁর আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য সুযোগ দেওয়া হয়। তাই তাঁদেরও ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য সুযোগ দেওয়া হবে। এরপর তাঁদের দেওয়া ব্যাখ্যা এবং প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বনানী থানায় মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), পুলিশ সদর দপ্তর, জেলা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে কাজ করেছেন জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, ফলে তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। কাজেই এই অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পুলিশের পেশাদারিত্বের কোনো গাফিলতি নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। একই সঙ্গে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায় সেসব দিক বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও জানান পুলিশ কমিশনার।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আছাদুজ্জামান মিয়া আশা প্রকাশ করে বলেন, আসামিদের কাছ থেকে জব্দ করা আলামতের ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ মতামত পেলে দ্রুত এই মামলা শেষ করা সম্ভব হবে এবং দ্রুত অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
এর আগে আছাদুজ্জামান তাঁর কার্যালয়ে আসন্ন রমজান মাসের নিরাপত্তা নিয়ে ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীতে কোনো চাঁদাবাজি চলবে না। আর যানজট নিরসনে সড়ক ও বিপণি-বিতানকেন্দ্রিক যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে, ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায় জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা নিতে বিলম্ব করা ও কর্তব্য পালনে পুলিশের অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করেছে পুলিশ।
তিন সদস্যের এই কমিটিতে প্রধান করা হয় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারকে (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস)। অন্য দুজন হলেন ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার ও ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ)।