ছাত্রদের তালিকাই নেই, ছাত্রীদের আসনে হ-য-ব-র-ল
নারায়ণগঞ্জ কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রদের কোনো তালিকাই আসেনি। আর ছাত্রীদের তালিকা এলেও সেখানে তিনটি বিভাগেই বরাদ্দ থাকা আসনের সঙ্গে ভুল করেছে শিক্ষা বোর্ড। বুধবার থেকে কলেজে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো ভর্তি প্রক্রিয়াই শুরু করতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
কলেজের অধ্যক্ষ বিরাজ কুমার সাহা ও অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলেজে ভর্তির জন্য এবার এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করেছিল প্রায় আট হাজার ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে প্রায় দুই হাজার ছাত্রী ও ছয় হাজার ছাত্র। আট হাজার আবেদনের মধ্যে এক হাজার ৪০০ জন এসএমএসের মাধ্যমে শুধু নারায়ণগঞ্জ কলেজেই ভর্তি হতে আবেদন করেছিল। বাকিরা ভর্তি হতে অনলাইনে আবেদন করেছিল। তাঁদেরও বেশির ভাগের প্রথম পছন্দ ছিল নারায়ণগঞ্জ কলেজ।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, বোর্ড থেকে কলেজে ছাত্রদের অনুমোদিত আসন এক হাজার ৮৫০ জন। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এক হাজার ৫০০, মানবিক বিভাগে ২০০ ও বিজ্ঞান বিভাগে ১৫০টি আসন রয়েছে। কিন্তু একজন ছাত্রেরও ভর্তির তালিকা পায়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে কলেজে মানবিকে ৮০০ অনুমোদিত আসন থাকলেও বোর্ড ৬২০ জন ছাত্রীর তালিকা প্রকাশ করেছে। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৫০ জন ছাত্রীর অনুমোদন থাকলেও সেখানে ২৭৩ জনের নাম প্রকাশ করেছে বোর্ড। বিজ্ঞান বিভাগে ৫০ জনের আসন অনুমোদন থাকলেও ১৯৫ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
বুধবার এক শিক্ষার্থী এনটিভি অনলাইনকে বলে, ‘আমি নারায়ণগঞ্জ কলেজ ছাড়া আর কোথাও ভর্তির জন্য আবেদন করিনি। কিন্তু ছেলেদের তালিকাই নেই। বুঝতে পারছি না এখন কী করব।’
একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু তারা তো ভর্তিই হতে পারেনি।
এদিকে ছাত্রদের ভর্তির তালিকা না পেয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষও চরম হতাশায়। শিক্ষক ও কর্মকর্তারা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ছোটাছুটি করছেন। কলেজের অস্তিত্ব নিয়ে তাঁরা এখন শঙ্কিত। তাঁরা মনে করেন, এই কলেজে মাত্র ২০০ টাকা বেতন, অন্যদিকে বেসরকারি কলেজগুলোতে এক হাজার ৫০০ টাকা গুনতে হয় অভিভাবকদের।
নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ বিরাজ কুমার সাহা বলেন, ‘আমার এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য গত বছর এসএমএস করেছিল চার হাজার ৪০০ জন। এ বছর আবেদন করেছে প্রায় আট হাজার। এর মধ্যে ছাত্রী দুই হাজারের মতো। ছয় হাজার ছাত্র আবেদন করেছে। কিন্তু ছাত্রদের কোনো তালিকাই আসেনি। মেয়েদের তালিকা দিলেও সেখানে ভুল-ভ্রান্তি আছে।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘হয়তো কারিগরি ত্রুটির কারণে হয়েছে। কিন্তু আমরা এখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি।’ তিনি বলেন, শিক্ষাসচিব তাঁদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।