আমি বাড়ি ছাড়ব না : মওদুদ
আপিল বিভাগে করা রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় গুলশানের বাড়ি ছাড়তে হচ্ছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে।
তবে রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘আমি বাড়ি ছাড়ব না, বাড়ি ছাড়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ, বাড়ির মালিক সরকার নয়।’
আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কার্যালয়ের সামনে প্রতিক্রিয়ায় মওদুদ আহমদ এ কথা বলেন।
এর আগে সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গুলশানের ২ নম্বর সেকশনের ১৫৯ নম্বর বাড়িটির মালিকানা বিষয়ে করা রিভিউ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ রিভিউ শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘বাড়ির মালিক অস্ট্রীয় নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজ। তাঁর সঙ্গেই বোঝাপড়া হবে। এটা আমার ও বাড়ির মালিকের বিষয়। সরকারের কোনো বিষয় নয়।’
মওদুদ আহমদ আরো বলেন, ‘বাড়ির মালিক যে সরকার, আদালত তা উল্লেখ করেনি এবং সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি।’
গত ৩১ মে শুনানি শেষে ৪ জুন রায়ের দিন নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ। গত বছর ২ আগস্ট মওদুদ আহমদের ভাই মনজুর আহমদের নামে ওই বাড়ির নামজারির নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজউকের আপিল গ্রহণ করেন আপিল বিভাগ।
গত ৩০ আগস্ট এ মামলার ৮০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে পরে রিভিউ করেন মওদুদ।
এক আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১০ সালের ১২ আগস্ট ওই বাড়ি মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন করার জন্য হাইকোর্ট রায় দেন। রাজউক এ রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ দায়ের করে ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ আপিল বিভাগ রাজউককে আপিলের অনুমতি দেন। এরপর চলতি বছর এ মামলার শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাড়িটি নিয়ে দুদকের উপপরিচালক হারুনুর রশীদ রাজধানীর গুলশান থানায় মওদুদ আহমদ ও তাঁর ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
২০১৪ সালের ১৪ জুন এ মামলায় অভিযোগ আমলে নেন বিচারিক আদালত। এর বিরুদ্ধে তাঁদের আবেদন গত বছরের ২৩ জুন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ করেন মওদুদ আহমদ। এ আবেদনের শুনানি শেষ হওয়ার পর রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার দুটি বিষয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ।
দুদকের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাড়িটির প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির (রাজউক) কাছ থেকে এক বিঘা ১৩ কাঠার এ বাড়ির মালিকানা পান এহসান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্রে এহসানের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী অস্ট্রিয় নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন এহসান। তাঁরা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়।
এর পর ১৯৭৩ সালের ২ আগস্ট মওদুদ তাঁর ইংল্যান্ডপ্রবাসী ভাই মনজুরের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করে বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেন বলে মামলায় অভিযোগ করে দুদক।