মাইকিং করেও লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা যায়নি : মায়া
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জানিয়েছেন, রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে টানা বর্ষণে দুদিন ধরে মাইকিং করা হয়েছে। ওই মাইকিং করেও ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনা যায়নি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পাহাড় ধসের ঘটনা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ত্রাণমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতি বছর এই সময় পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে, তারপরও কেন সরকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনেনি এমন প্রশ্নের উত্তরে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘দুর্যোগ তো বলে কয়ে আসে না। তা ছাড়া আমরা দুদিন ধরে মাইকিং করেছি, মানুষ সহজে বাসা-বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না। তারপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোর করে কিছু লোককে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। এই সংখ্যা হলো সাড়ে চার হাজার।’
সেনাবাহিনীর উদ্ধার তৎপরতা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। সেখানে একজন মেজরসহ চারজন সদস্য শহীদ হয়েছেন।
তারা কিন্তু ঘরে বসে থেকে মারা যাননি। দুজন এখনো মাটির নিচে চাপা পড়ে আছেন। তাঁদের এখনো উদ্ধার করা যায়নি। তাদের এই ভূমিকা অনেক বড় করেই দেখতে হবে। আমরা সেনাবাহিনীর এই ভূমিকার প্রশংসা করি। একই সঙ্গে যারা মারা গেছে, তারা সবাই যেন জান্নাত পায় এই জন্য আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি।’
হতাহতের সংখ্যা প্রসঙ্গে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৩৯ জন মারা গেছে। এর মধ্যে চারজন সেনা সদস্য। দুই সেনা সদস্য এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
মন্ত্রী জানান, অতিবৃষ্টির কারণে এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এখনো অনেকে নিখোঁজ আছে।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল এবং সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বেসরকারি হিসাবে পাহাড় ধসে রাঙামাটি, চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে এ পর্যন্ত ৪৩ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া গাছচাপা, দেয়ালচাপা ও বজ্রপাতে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে পাহাড় ধসে রাঙামাটিতে চার সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যসহ ২৯ জন, চট্টগ্রামে আটজন ও বান্দরবানে ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে থাকা নিম্নচাপের প্রভাবে গত রোববার রাত থেকেই টানা বৃষ্টি হচ্ছে সারা দেশে। সোমবার এটি বাংলাদেশের উপকূল ও স্থলভাগ অতিক্রম করে। এর প্রভাবে বৃষ্টির পরিমাণ আরো বাড়ে। টানা বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে গ্রাম-শহরে দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়। অনেক স্থানে বন্ধ করে দেওয়া হয় নৌযান চলাচল।