চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ও ঢলে ডুবে ২৪ জন নিহত
টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ও ঢলের পানিতে ডুবে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পাহাড় ধসে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জঙ্গল বগাবিল এলাকায় ১৪ জন, চন্দনাইশের ধোপাছড়ি এলাকায় চারজন ও বাঁশখালীতে একজন নিহত হয়েছে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে মারা গেছে পাঁচজন।
এ ছাড়া আজ ভোরে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় ঝড়ের সময় দেয়াল চাপা পড়ে হানিফ নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এসব তথ্য জানিয়েছে।
রাঙ্গুনিয়ার ঘটনাস্থল দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায়, পাহাড়ি ঢলে শঙ্খ ও সাঙ্গু নদীর পানি বাড়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
পাহাড়ি ঢলের কারণে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় রাঙামাটি ও বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবু ইউছুপ চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়নে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী আসগর আলীর কাঁচা ঘরের ওপর মাটি ধসে পড়ে। এ ঘটনায় আজগর আলীর শিশুকন্যা মাহিয়া মাটির নিচে চাপা পড়ে মারা যায়। এ ছাড়া ছনবুনিয়া উপজাতিপাড়ায় একটি ঘরের ওপর পাহাড় ধসে একই পরিবারের দুই শিশু কেউচা কেয়াং (১০), মেমাউ কেয়াং (১৩) এবং গৃহবধূ মোকাইং কেয়াং (৫০) নিহত হন।
এ ঘটনায় ওই পরিবারের সানুউ কেয়াং (২১) ও বেলাউ কেয়াং (২৮) নামের আরো দুজন আহত হয়েছেন। তাঁদের বান্দরবান হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউছুপ চৌধুরী।
জেলা প্রশাসনের হিসাবে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের সংখ্যা ৩০টি। আর এতে বসবাস করছে অন্তত চার হাজার পরিবার। বৃষ্টি মৌসুমে লোক দেখানো উচ্ছেদ অভিযান চললেও দীর্ঘদিনেও স্থায়ী সমাধান বের করতে পারেনি প্রশাসন। তবে টানা বৃষ্টি আর বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসের পর আজ নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোর পাদদেশ থেকে শতাধিক পরিবারকে উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে অতিবর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে তিনদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে নগরীর আগ্রাবাদ,বন্দরসহ বিভিন্ন এলাকার বেশির ভাগ মানুষ।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম শহরের একেক স্থানের জলাবদ্ধতার কারণ একেকটি। প্রত্যেকটির কারণ নির্ণয় করে তা অপসারণের কাজ করা হচ্ছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের যেকোনো মূল্যে সরাতে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।