পাহাড়ধসের ঘটনায় রাঙামাটিতে আরো দুইজনের লাশ উদ্ধার
টানা বর্ষণে পাহাড়ধস ও পাহাড়ি ঢলে বিপর্যস্ত রাঙামাটিতে শিশুসহ আরো দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ১১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো। আর পাঁচ জেলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৫ জনে।
উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে লাশটি উদ্ধার করেন।
রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক গোলাম মোস্তফা এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, অভিযানে অংশ নেওয়া উদ্ধারকর্মীরা বেলা ১১টার দিকে শহরের সার্কিট হাউস এলাকা থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও শহরের ভেদভেদী লোকনাথ এলাকা থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের ঘটনায় নিখোঁজ সেনাসদস্যসহ ১০৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এখনো বিভিন্ন স্থানে অনেকে মাটিচাপা পড়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অতিবৃষ্টিতে পাহাড়ধস, পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে ও গাছপালা ভেঙে পড়ে পাঁচ জেলায় বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১৫৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে কেবল রাঙামাটিতেই প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ কেড়ে নিয়েছে ১০৮ জনের প্রাণ। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ৩৬ জন, বান্দরবানে ছয়জন, খাগড়াছড়িতে দুজন ও কক্সবাজারে দুজনের প্রাণহানি হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে থাকা নিম্নচাপের প্রভাবে গত রোববার রাত থেকে টানা বৃষ্টি হয় সারা দেশে। সোমবার এটি বাংলাদেশের উপকূল ও স্থলভাগ অতিক্রম করে। এর প্রভাবে বৃষ্টির পরিমাণ আরো বাড়ে। টানা বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে গ্রাম-শহরে দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। এ কারণে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজারে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়। অনেক স্থানে বন্ধ করে দেওয়া হয় নৌযান চলাচল।
সোমবার থেকে পাহাড়ি এলাকাগুলোয় একের পর এক পাহাড় ধসে পড়তে থাকে। মঙ্গলবার সকাল থেকে হতাহতের খবর মিলতে থাকে। বাড়তে থাকে লাশের সংখ্যা। এর মধ্যে ভোরে রাঙামাটির মানিকছড়িতে একটি পাহাড় ধসে মাটি ও গাছ পড়ে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে রাঙামাটি জোন সদরের নির্দেশে মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ওই সড়কে গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। গত বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৬০ সদস্যের উদ্ধারকর্মীর দল রাঙামাটিতে গিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়।