‘সবশেষে বিএনপি নির্বাচনে আসবে’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নানা অসঙ্গতি ও সম্ভাবনা নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন তিনি। এতে উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের অবস্থান, নির্বাচন, নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ সাময়িক প্রসঙ্গ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের নিজস্ব প্রতিবেদক মুহম্মদ আকবর।
এনটিভি অনলাইন : নির্বাচনের এখনো অনেক দিন বাকি। আপনারা নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেই গেছেন। এটা কিসের ইঙ্গিত?
আহমদ হোসেন : এটা কোনো ইঙ্গিত না। আমরা নির্বাচনের একটা পরিবেশ তৈরি করার জন্য কাজ করছি। বিএনপি যেহেতু আগেরবার নির্বাচনে না এসে একটা সহিংসতার পথ বেছে নেয়, কাজেই তাঁদের কাছে একটা বার্তা দেওয়া দরকার যে নির্বাচনের জন্য আপনারা প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বিশ্বাস করি। নির্বাচন হোক; সেটা বিশ্বাস করি। আগের নির্বাচনেও সেটা চেয়েছি। যে কারণে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, গণভবনে আসুন আমরা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করি। কীভাবে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা যায় সে পরামর্শ করি। কিন্তু সেটা না করে তিনি চলে গেলেন পেট্রলবোমার রাজনীতিতে। মানুষ হত্যার রাজনীতি শুরু করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বরাবরই সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করি। এ জন্য এবার আমরা আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। জনগণের মন জয় করে পুনরায় ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছি।
এনটিভি অনলাইন : নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে আপনার মূল্যায়ন কী?
আহমদ হোসেন : এ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগে যাঁরা এ কমিশনে ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। আমার মনে হচ্ছে, অতীতের অভিজ্ঞতা এবং বর্তমানের দক্ষতা দিয়ে একটা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে তাঁরা অগ্রসর হচ্ছেন।
এনটিভি অনলাইন : আপনাদের আগাম প্রস্তুতি, নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ঘোষণা; এতে করে মানুষ ভাবতেই পারে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই হচ্ছে নির্বাচন।
আহমদ হোসেন : না। যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এটা আসলে নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। আমাদের কোনো বিষয় না। তবে আমরা অনুমান করছি, ২০১৮ সালের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে।
এনটিভি অনলাইন : বিএনপি নেতারা বলছেন যে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবেন না। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কাজে তাঁরা সহায়তা করবেন। এটাকে কীভাবে দেখছেন?
আহমদ হোসেন : এগুলো কিছু বলার জন্য বলা। এখন তাঁরা কৌশলগত কারণে বলছে না যে আমরা নির্বাচনে যাব। তাঁদের প্রস্তুতি দেখেই তো বোঝা যায়। সবকিছু কি বলতে হয়? আমার অঙ্গভঙ্গি, আমার ব্যবহারে, আমার আচরণে সেটা বোঝা যাবে না যে, আমি কী করতে যাচ্ছি, আমি কী করতে যাই? বিএনপির আচরণ তাদের কর্মকাণ্ড তাদের তথাকথিত ভিশনে তারা কী ঘোষণা দিয়েছে? ঘূর্ণিঝড় যখন আঘাত করে এর তিন-চারদিন আগে থেকেই কিন্তু আঁচ করা যায়। আবহাওয়া অফিস একটা বিপদসংকেত দেয়। তাদের এটাকে বিপদসংকেত বলব না, তবে একটা দূরবর্তী সংকেত আমরা পাচ্ছি। ধীরে ধীরে তারা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা কৌশলগত কারণে বলতে পারছে না। এটা ইন টাইম তারা (বিএনপি) বলে দেবে যে, আমরা তাদের (সরকারকে) চাপ দিয়েছি কাজ হয়নি, কিন্তু জনগণের কথা ভেবে জনগণের দিকে চেয়ে আমরা নির্বাচনে এসেছি। সবশেষে তারা নির্বাচনে আসবে।
এনটিভি অনলাইন : ভিশন ২০৩০–এর বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, আওয়ামী লীগের ভিশন নকল করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যদি সিরাজুল আলম খানের চৌদ্দ দফা দেখি তাহলে দেখব যে অধিকাংশই সেখান থেকে নেওয়া হয়েছে…
আহমদ হোসেন : আমি বলব শেখ হাসিনার ভিশন নকল করে করেছে। আর সিরাজুল আলম খানের চৌদ্দ দফা তো একটা কর্মসূচি। কর্মসূচি এবং ভিশনের মধ্য কিন্তু পার্থক্য আছে।
এনটিভি অনলাইন : যেমন…
আহমদ হোসেন : শেখ মুজিবুর রহমান ভিশন দিয়েছিলেন ৬ দফা। সেটা মানেই স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশের চিন্তা। কাজেই প্রথম ভিশন দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেকেন্ড ভিশন দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি প্রথমে দিলেন ভিশন ২০২১, পরে ২০৪১। তিনি ভিশন শব্দ যোগ করেছেন। সে ভিশন শব্দটা চুরি করে তাঁরা আরেকটা ভিশন দিয়েছেন। সুতরাং ন্যায়সঙ্গত কারণেই বলা যায় তাঁরা আমাদের অনুসরণ করছেন। তিনি যখন দেখলেন ভিশন দিয়েই শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছেন, কাজেই তাঁদেরটাই ফলো করি। দেখুন, তাঁদের ভিশনে সবই আছে শুধু একটা বিষয় নেই সেটা হলো- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। তাঁরা সে বিচার কন্টিনিউ করবেন না সেটা তাঁদের ভিশনে নেই। এতেই তাঁদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়ে যায়। তিনি বলেছেন আইনের সংস্কার করবেন। তিনি কোন আইনের সংস্কার করবেন? তিনি কি আবার একটা আইন করবেন যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এটা ন্যায়সঙ্গত ছিল না? নাকি বলবেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যারা করেছে তাদের বিচার হোক সেটা বলবেন? জিয়াউর রহমান সাহেব বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচার করা যাবে না পঞ্চম সংশোধনীতে বলেছিলেন। তাহলে কি একাত্তরের খুনি, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে, পলাতক আছে, তাদের কি আবার দেশে ফিরিয়ে এনে, মুক্তি দিয়ে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হবে। এটা ব্যাখ্যা করেন নাই কিন্তু আমরা এর ইঙ্গিত দেখেই বুঝতে পারি।
এনটিভি অনলাইন : আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের পর পরই আপনারা বলেছিলেন সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। সে লক্ষ্যে আপনারা কাজ করবেন এবং তৃণমূলকে শক্তিশালী করবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখছি উল্টো, তৃণমূলে আওয়ামী লীগ নিজেদের মধ্যে নিয়মিত বিরতিতেই সংঘর্ষ করছে। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?
আহমদ হোসেন : নিয়মিত সংঘর্ষ হচ্ছে আপনি উদাহরণ দেন। এটা উল্লেখ করেন।
এনটিভি অনলাইন : যদি বলি সিলেটে…
আহমদ হোসেন : সিলেটে কখন কী হয়েছে? আমি তো সিলেটের ইনচার্জ…
এনটিভি অনলাইন : পক্ষে-বিপক্ষে সংঘর্ষ সেখানে নিত্যদিনের ঘটনা। দুজনকে বহিষ্কারও করেছেন শুনেছি।
আহমদ হোসেন : সেটা তো আমাদের দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার কারণে। সেটা তো দ্বন্দ্ব না।
এনটিভি অনলাইন : সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নরসিংদী, কুমিল্লা প্রভৃতি এলাকায় তো নিয়মিতই সংঘর্ষ হচ্ছে…
আহমদ হোসেন : এটা ক্ষমতার লড়াই কিন্তু আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে নয়।
এনটিভি অনলাইন : বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে পঙ্কজ দেবনাথের সঙ্গে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব, সেটা কী বলবেন?
আহমদ হোসেন : সেটাও দলকে নিয়ে না। দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সেটা আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে নয়। আওয়ামী লীগ একটা বড় দল। এখানে নেতায় নেতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে। সব এলাকাতেই থাকে।
এনটিভি অনলাইন : আবার যদি পাবনায় ভূমিমন্ত্রীর ছেলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্য নেতার দ্বন্দ্বের কথা বলি…
আহমদ হোসেন : সেটা কিন্তু দলীয় না, পারিবারিক। তাঁর ছেলে এবং জামাতার দ্বন্দ্ব।
এনটিভি অনলাইন : গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জেনেছি যে, ছাত্রলীগ-যুবলীগ সেখানে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ করে, এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ কখনো সরব ভূমিকায়, কখনো কারো পক্ষ নেয়, কখনো নীরব থাকে…
আহমদ হোসেন : এখানেও আধিপত্যের লড়াই। ছেলে আধিপত্য করবে না জামাতা করবে। সেটাকে কেন্দ্র করেই এসব। তবে এ বিষয়ে সরকারকে অভিনন্দন জানানো উচিত যে, ভূমিমন্ত্রীর ছেলে কিন্তু কারাগারে। আইনের শাসন কাকে বলে এটার একটা নজির। শেখ হাসিনার সরকার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে অন্যায় যেই করুক, যে দলই করুক তার ছাড় দেওয়া হবে না। মন্ত্রীর ছেলে হলেও না। আইনের শাসন বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধপরিকর।
এনটিভি অনলাইন : সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও আবদুস শহীদের মধ্যে একটা যে দ্বন্দ্ব আছে। সে এলাকার সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আপনি কী ভূমিকা নিচ্ছেন?
আহমদ হোসেন : এটা দ্বন্দ্ব না, প্রতিযোগিতা। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন, তাঁদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এটাকে দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখছেন কেন?
এনটিভি অনলাইন : আপনি বলছেন আধিপত্যের লড়াই। এ ক্ষেত্রে আপনাদের করণীয় কী থাকবে?
এনটিভি অনলাইন : আমরা কিন্তু প্রতিনিয়ত প্রতিহত করছি। আওয়ামী লীগ একটা বডি, এর সর্দি-কাশি হবে এটাই স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগ একটা বৃহৎ দল, এর এখানে যেমন ঢেউ আসে আবার থেমেও যায়। আবার ঢেউয়ের আঁচড়ে পাড় ভেঙেও যায়। কিন্তু যেভাবে আপনি প্রশ্নটি করেছেন যে প্রতিদিন হচ্ছে এমন কিন্তু না। দেখুন আমাদের চেয়ে বিএনপিতে বেশি হচ্ছে। তারা অপজিশনে আছে তারপরও।
এনটিভি অনলাইন : আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি দেখা দিচ্ছে। আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব কী হতে পারে?
আহমদ হোসেন : বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটছে। আওয়ামী লীগ তো বিশাল এক দল, তার নেতাও অসংখ্য। যা হচ্ছে এসব তো নেতায়-নেতায় প্রতিযোগিতা, এটা তো সব সময়ই থাকবে। কারণ, ৩০০ সাংসদ বাদ দিলেও ৩০০ আসনে আমাদের আরো অনেক বিকল্প প্রার্থী রয়েছে। তাদের মধ্যে এ প্রতিযোগিতাটা থাকবেই, এ কারণে দলও চাঙ্গা থাকবে। কিন্তু কোনো ধরনের দ্বন্দ্ব যাতে না হয়, সেটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি আমরা।
আর আমরা যে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তার তো অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। বলেছিও যে, একজন মন্ত্রী….ভূমিমন্ত্রীর ছেলে কিন্তু জেলে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে আওয়ামী লীগ ভুল করে না। এবং এ ক্ষেত্রে তৃণমূলও দ্বিমত পোষণ করে না।
এনটিভি অনলাইন : আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া কেমন হতে পারে?
আহমদ হোসেন : এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা সেটি মাঠে নিয়ে যাব। কারণ, সরকার গঠন করতে তো আমাদের জনগণের রায় নিয়ে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। সে কারণে যাদের জনপ্রিয়তা থাকবে তাদেরই বেছে নেওয়া হবে; তাদের জিততে হবে ভোটে। আর পাবলিক গ্রহণযোগ্যতা কাদের বেশি সেটি দলের কাছে, নেত্রীর কাছে, আমাদের কাছে আগেই চলে আসবে। আমরা তাই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি। কারা জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বেশি রাখছে, কারা জনগণের কাছে যাচ্ছে; সেটি দেখছি।
এনটিভি অনলাইন : নির্বাচনী এলাকায় অনেক মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতাদের জনপ্রিয়তা তলানিতে, তাঁদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হতে পারে?
আহমদ হোসেন : যারা বিগ লিডার, তাঁদের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী দেখবেন। তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন যে, জাতির প্রয়োজনে তিনি কাকে কীভাবে বিবেচনা করবেন।
এনটিভি অনলাইন : বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার অভিযোগ আছে সরকারের বিরুদ্ধে……
আহমদ হোসেন : এটাই তো বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রমাণ। প্রধান বিচারপতির ক্ষণে ক্ষণে বক্তব্য, যেসব সরকারের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। এটাই প্রমাণ করে বিচার বিভাগ কতটা স্বাধীন।
এনটিভি অনলাইন : ভোটের হিসাব যত বাড়ছে, আওয়ামী লীগের ওপর ইসলামী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর চাপ তত স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে কি?
আহমদ হোসেন : আওয়ামী লীগ বামও না, আবার ডান ইসলামী দলও না। আমরা মধ্যপন্থার রাজনৈতিক দল। বাম ও ইসলামী দলগুলোর মধ্যে যেসব শুভ চিন্তা রয়েছে, সেসব গ্রহণ করতে তো আমাদের কোনো সমস্যা নেই। ইসলামী দলগুলোর মধ্যে যারা উগ্রবাদী না তাদেরকে মূলধারার সঙ্গে তো সম্পৃক্ত করা যায়। কারণ সবার অংশগ্রহণেই এদেশ, কাজেই বাঙালিত্বের যে স্পিরিট, মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা; সেটা থেকে তো আমরা সরে আসিনি। মৌলবাদের বিরুদ্ধে যে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, যারা জামায়াত-শিবিরবিরোধী; তাঁদের আমরা সঙ্গে নেব। তাঁদের ভালো মতামত গ্রহণ করব।
এনটিভি অনলাইন : ইসলামী দলগুলোকে নিয়ে জোট সম্প্রসারণে আপত্তি আছে ১৪ দলের শরিকদের, এ ক্ষেত্রে তাদের জোটে নেওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
আহমদ হোসেন : ১৪ দল একটি নীতিগত আদর্শের জোট। নীতিগত আদর্শের জোট ও নির্বাচনী জোটে পার্থক্য রয়েছে। ১৪ দলীয় যে জোট, সামনে তা বাড়তে পারে; আর ১৪ দলের নীতি অনুযায়ী কোনো ইসলামী দল যদি আসতে পারে তাহলে তাদের নেওয়া যেতে পারে।
এনটিভি অনলাইন : নির্বাচনে ধর্মীয় গোষ্ঠীকে আকৃষ্ট করতেই কি আওয়ামী লীগ নিজেদের ইসলামিক সহযোগী সংগঠন চালুর কথা ভাবছে?
আহমদ হোসেন : এ বিষয়টি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সেটি প্রধানমন্ত্রী নেবেন। তবে এই ভাবনাটা কিন্তু খারাপ না। কারণ, ওলামা লীগ তো আমাদের সহযোগী সংগঠন ছিল না। আর তারা ছিল বিভক্ত, ফ্রি স্টাইলে চলছিল। তাদের কর্মকাণ্ড ছিল আওয়ামী লীগের মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে এদের ঢেলে সাজিয়ে আমাদের ধারায় নিয়ে আসা যেতে পারে।
এনটিভি অনলাইন : আগামী নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের বার্তা কী হতে পারে?
আহমদ হোসেন : নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে দলের থিংক-ট্যাংক যাঁরা আছেন, তাঁরা কাজ করছেন। নির্বাচনের তো অনেকটা সময় বাকি, আবার ইশতেহার তৈরিও অনেক সময়সাপেক্ষ বিষয়। সেভাবেই তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে ইশতেহারে ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ প্রাধান্য পাবে। দুটোকে সামারাইজ করেই ইশতেহার দেওয়া হবে। বলা যায়, ইশতেহারের মূল ফাউন্ডেশন হবে ভিশন, সেটাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা ইশতেহার সাজাব।
তবে কী কী করব সেই শেষ কথা বলার সময় এখনো আসেনি। এর সঙ্গে জনমানুষের নতুন নতুন আকাঙ্ক্ষা যুক্ত হতে পারে। সময়ের সঙ্গে জন-আকাঙ্খা কোন দিকে যায় সেটি আমরা দেখব। জনমতের যে চাহিদা, তার প্রতিফলন ইশতেহারে থাকবে। ইশতেহার তো জনগণের জন্য, তাদের আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে, তাদের চাহিদা বিবেচনা করেই সেটি চূড়ান্ত হবে।