ফরহাদ মজহার পরিকল্পিত ভ্রমণ করেছেন : ডিআইজি
কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার পরিকল্পিতভাবে ভ্রমণ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) দিদার আহমেদ।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার পর খুলনার ফুলতলায় ফরহাদ মজহারের বিষয়ে করা এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ডিআইজি।
এর আগে সোমবার রাতে যশোরের নোয়াপাড়া এলাকায় একটি বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করা হয়।
ব্রিফিংয়ে দিদার আহমেদ বলেন, ‘অপহৃত মনে হয়নি। কারণ, একজন সুস্থ মানুষ যখন কোথাও বেড়াতে যায়, যে অবস্থা যে রকম থাকে, ঠিক সেভাবেই উনাকে (ফরহাদ মজহার) উদ্ধার করা হয়েছে। উনার সাথে একটা ব্যাগ আছে। সেই ব্যাগে উনার এক্সট্রা (বাড়তি) জামা, একটা গেঞ্জি, কিছু টাকা-পয়সা, একটা মোবাইল ও চার্জারও আছে। মোবাইলের চার্জারও নিতে উনি ভোলেননি। অর্থাৎ উনি নরমালি (স্বাভাবিকভাবে) পরিকল্পিতভাবে জার্নি (ভ্রমণ) করেছেন।’
‘তাঁর (ফরহাদ মজহার) পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে মনে হয়েছে, তিনি স্বেচ্ছায় বেরিয়েছেন। আমরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বেড়াতে গেলে যেমন প্রয়োজনীয় জিনিসটুকু নিয়ে নিই, উনার ব্যাগেও ঠিক সেই জিনিসগুলোই ছিল।’
ডিআইজি বলেন, উনি কেন, কীভাবে নিখোঁজ হলো, সেটা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরে জানানো হবে। এ ছাড়া মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে তদন্ত করা হবে।
সোমবার বিকেলে ফরহাদ মজহারের রাজধানীর শ্যামলী রিং রোডের ১ নম্বর বাড়িতে তাঁর বন্ধু গৌতম দাস সাংবাদিকদের জানান, ভোর ৫টার দিকে বাসার সামনে থেকে কে বা কারা ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাঁকে নিয়ে যাওয়ার আধা ঘণ্টা পর ফরহাদ মজহারের মোবাইল ফোন থেকে স্ত্রী ফরিদা আখতারের কাছে টেলিফোন আসে। ফোনে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ এ কথা বলেই তিনি ফোনটি কেটে দেন। এর পর বিষয়টি আদাবর থানার পুলিশকে জানানো হয় বলে জানান গৌতম।
পরে সোমবার দুপুরে ফরহাদ মজহারের মোবাইল নেটওয়ার্ক খুলনার শিববাড়ী এলাকায় বলে নিশ্চিত হয় র্যাব-৬। তাঁকে উদ্ধারে সন্ধ্যা ৬টার দিকে র্যাব-৬-এর অধিনায়ক খন্দকার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে শিববাড়ী এলাকায় কেডিএ অ্যাপ্রোচ রোড, ইব্রাহিম মিয়া রোড এলাকায় বাড়ি বাড়ি তল্লাশি শুরু শুরু হয়। এ সময় আশপাশে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনও তল্লাশি করা হয়।
পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের নোয়াপাড়া এলাকায় হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করা হয়।
রাত ২টার দিকে ঢাকার আদাবর থানা পুলিশ ও ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের একটি দল ফরহাদ মজহারকে নিয়ে মাইক্রোবাসে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। আজ মঙ্গলবার সকালে আদাবর থানায় নিয়ে আসা হয় মজহারকে।