রামপালে আপত্তি নেই ইউনেসকোর, জানাল সরকার!
বাগেরহাটে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ইউনেসকো তাদের আপত্তি তুলে নিয়েছে বলে দাবি করেছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পোল্যান্ডে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪১তম অধিবেশনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী রামপাল প্রকল্পের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এরপরই আপত্তি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি।
বিবিসি জানিয়েছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তুতি হিসেবে ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেসব উদ্যোগকে স্বাগতও জানিয়েছে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি।
বাগেরহাটের রামপালে নির্মিত হচ্ছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট শীর্ষক ওই কেন্দ্র ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড। প্রকল্পে সহায়তা করছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ভারতের ন্যাশনাল পাওয়ার থারমাল করপোরেশন (এনটিপিসি) লিমিটেড।
প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই পরিবেশবাদীসহ একাধিক সংগঠন অভিযোগ করে বিশ্বের অন্যতম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের কাছাকাছি এলাকায় ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হচ্ছে। আর এতে হুমকির মুখে পড়বে সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্য।
তবে সরকার শুরু থেকেই জানিয়ে আসছে, ওই বিদ্যুৎপ্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না।
এদিকে সুন্দরবনকে ১৯৯৭ সালে ইউনেসকো বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্য ঘোষণা করে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে তর্ক ও অন্যান্য পরিবেশগত ঝুঁকি পর্যবেক্ষণ করতে ওই সংস্থার তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গত বছর মার্চে সুন্দরবন এলাকা পরিদর্শন করে।
গত বছরই ১৮ অক্টোবর ইউনেসকো জানায়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে ক্ষতির আশঙ্কা আছে সুন্দরবনে। এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করে ওই সংস্থা। ওই প্রতিবেদনে চারটি ক্ষতির কথা তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথমত, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ হবে কয়লা পুড়িয়ে। ওই কয়লার ছাই পরিবেশের জন্য হুমকি। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্র থেকে বের হওয়া বর্জ্য ও পানি।
তৃতীয়ত, জাহাজ চলাচল বাড়বে, ড্রেজিং করা হবে; যা বনের জন্য ক্ষতিকর। চতুর্থত, বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে ওই এলাকার শিল্পায়ন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বনের পরিবেশকে হুমকিতে ফেলবে।