রাজশাহীতে এবার রান্নাঘরে ১২৫ গোখরা
রাজশাহীতে এবার রান্নাঘরে পাওয়া গেছে ১২৫টি গোখরা সাপ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলার তানোর পৌরসভার ভদ্রখণ্ড মহল্লার কৃষক আক্কাস আলীর রান্নাঘরে গোখরা সাপের বাচ্চাগুলোকে মারা হয়।
আক্কাস আলী জানান, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তাঁর স্ত্রী হাসনা বেগম রাতের খাবার তৈরি করতে রান্নাঘরে যান। তখন তিনি ঘরের মেঝেতে তিনটি গোখরা সাপের বাচ্চা দেখে আতঙ্কে চিৎকার দেন। খবর পেয়ে এগিয়ে যান আক্কাস আলী। পরে তাঁর দুই ছেলে হাসিবুর রহমান ও আজিবুর রহমান সেখানে যান। তাঁরা তিনজনে একে একে মেরে ফেলেন ওই তিনটি সাপ। এরপর রান্নাঘরের কোনায় থাকা গর্তের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে আরো সাপ। সেগুলোও মেরে ফেলেন তাঁরা। একপর্যায়ে প্রতিবেশীরাও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। সব মিলিয়ে তাঁরা মোট ১২৫টি সাপ মারেন। পরে গর্ত খুঁড়ে পাওয়া যায় সাপের ১৩টি ডিম।
আক্কাস আলী আরো জানান, সাপগুলো এক থেকে দেড় ফুট লম্বা। কিছু ছোট সাপও ছিল, কেবলই ডিম থেকে বেরিয়েছে। তারা মা সাপটিতে গর্ত থেকে পালিয়ে যেতে দেখেছেন। পুরোনো মাটির বাড়ি হওয়ায় ইঁদুরের গর্তে ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়েছে গোখরা।
স্থানীয় কলেজছাত্র আল-আমিন জানান, সন্ধ্যায় চেঁচামেচি পেয়ে তাঁরা দৌড়ে যান ওই বাড়িতে। তারপর যা দেখেন তাতে চোখ ছানাবড়া। দেখেন, ১২৫টি বাচ্চা সাপ মেরে ডালিতে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আক্কাস আলীর বাড়িতে সাপ দেখতে ভিড় জমান এলাকাবাসী। অনেকে মুঠোফোনে ছবিও তোলেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ১১টার পর থেকে রাজশাহী মহানগরীর বুধপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মাজদার আলীর শোয়ার ঘরে একে একে মারা পড়ে ২৭টি গোখরা। ওই বাড়িটিও পুরোনো মাটির বাড়ি। এগুলোর সবগুলোই বাচ্চা সাপ। প্রতিটি লম্বায় আড়াই ফুটের মতো। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।
বৃহস্পতিবার মাজদারের বাড়িতে আরেকটি গোখরার বাচ্চা মারা হয়। মাজদার জানান, বাড়িটিতে সাপের বাচ্চাগুলোর মা-বাপ এখনও আছে, এই আশঙ্কায় দুপুরে পবা উপজেলা থেকে তিনজন সাপুড়ে এনে শোয়ার ঘরে খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। তবে সাপুড়েরা কোনো সাপ খুঁজে পাননি। বাড়িতে আর কোনো সাপ নেই বলে তাঁরা অভয় দেন।
এরপরও মাজদার ঘরে কার্বোলিক এসিড নিয়ে এসে রেখেছেন। সন্ধ্যায় ঘরের আসবাবপত্র গোছানোর কাজ শুরু করেন মাজদার আলীর স্ত্রী সুলতানা পারভীন। এ সময় ঘরের খাটের পায়া রাখার ইটের ওপর একটি সাপের বাচ্চা দেখেন তিনি। সাপ দেখে সুলতানা চিৎকার দিলে মাজদার আলী গিয়ে ওই সাপটিকেও মেরে ফেলেন।