মুক্তিযোদ্ধার আত্মহত্যার জন্য সচিবকে ‘দায়ী’ করছেন স্বজনরা
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব খান আত্মহত্যার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নানকে ‘দায়ী’ করেছেন নিহতের স্বজনরা। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধার একটি চিরকূটের সূত্র ধরে এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তবে সচিব ঘটনার সঙ্গে নিজের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর তোপখানা রোডের কর্ণফুলী হোটেল থেকে মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব খানকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় রাতেই শাহবাগ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে,আত্মহত্যার আগে আইয়ুব একটি চিরকুট লিখে গেছেন,এতে লেখা আছে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট ঘোষণার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে টাকা দিয়েছিলেন তিনি। পরে বারবার আবেদন করার পরও তিনি দক্ষিণ জেলা ইউনিট ঘোষণা করেননি। তাঁর বাসায় গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে তিনি গলাধাক্কা দিয়ে অপমান করে বের করে দেওয়ায় তিনি আত্মহত্যা করেন বলে চিরকুটে উল্লেখ করা হয়।
তবে এ অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব। তিনি বলেন, ‘শামসুল ইসলাম নামের এক ভদ্রলোক কোর্টের অর্ডার নিয়ে একটি আবেদন করেছেন তাঁদের দক্ষিণ জেলা কমান্ড গঠন করার জন্য। এ জন্য টাকা দিলে আমি তো কিছু করতে পারব না। আরেকটা যদি উপজেলা বা জেলা কমান্ড করে দেই, তাতে আমাকে কেন টাকা দেওয়া হবে? যদি হতো এটা একটা সার্টিফিকেট দেওয়া, প্রত্যয়নপত্র দেওয়া তাহলে হয়তো একটা লেনদেনের প্রশ্ন থাকত।
পুলিশ জানায়, গত ১৫ দিন আগে মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব খান ওই হোটেলে উঠেছিলেন। গতকাল সকালে হোটেলের ওই কক্ষ থেকে কীটনাশকের গন্ধ এলে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিষয়টি নজরে আসে। পরে কর্তৃপক্ষ কক্ষের দরজা বন্ধ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ওই কক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে আধাঘণ্টা পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ হোটেল কক্ষ থেকে ওই চিরকূটটি উদ্ধার করে। সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনের কললিস্ট ধরে ঢাকায় তাঁর এক আত্মীয়কে খবর দেয়।