বাধ্য হয়ে শিক্ষকদের নাম পুলিশকে দিয়েছি, প্রশ্নফাঁস নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের পরিচয় তিন বছর গোপন রাখার পর বাধ্য হয়ে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এসব শিক্ষক নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, ন্যায়নীতি হারিয়ে অর্থের পেছনে ছুটছেন।
আজ রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় বাণিজ্য অনুষদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সোহরাব হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য ড. শিরিন আকতার ও রেজিস্ট্রার ড. কামরুল হুদা, শিক্ষক সমিতির সভাপতি মিহির কুমার রায় ও ড. সেকান্দর চৌধুরী বক্তব্য দেন।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রভাবশালী শিক্ষকরা জড়িয়ে পড়েছেন উল্লেখ করে নাহিদ বলেছেন, এসব শিক্ষক টাকা নিয়ে ছাত্রদের প্রশ্নের উত্তর বলে দেন। কিছু মানুষ শিক্ষকদের নামে এ ধরনের কাজ করে এবং সমগ্র শিক্ষক সমাজকে অপমানিত করছেন বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু শিক্ষক আমাদের মধ্যে ডুকে পড়েছেন। সমগ্র শিক্ষককে কালিমালেপন করছেন। তাঁরা নৈতিক মূল্যবোধহীন। তাঁদের মধ্যে কোনো রকমের ন্যায়নীতি, সততা, দায়িত্বশীলতা নেই। তাঁরা নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেছেন। আমরা প্রশ্নপত্র আটকাতে গিয়ে সব পথ বন্ধ করে আসছি। এত বছর ধরে লড়াই করে যখন শেষ করে দিয়ে আসছি। সারা রাত ধরে প্রশ্নপত্র পাহারা দিয়ে সকাল ৬টা-৭টার দিকে ঘুমাতে যাই তখন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গেল। প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর তিন বছর ধরে গোপন রেখেছি। আমরা মনে করেছি শিক্ষকের ইজ্জত গেলে আমাদের আর থাকে কী? পরে বাধ্য হয়ে পুলিশকে বলেছি। ধরে ফেল আর কোনো উপায় নেই। এ ঘটনার সঙ্গে কত হেডমাস্টার, কত শিক্ষক ধরা পড়েছে।’
মন্ত্রী আরো বলেন, পরীক্ষার হলে শিক্ষকরা কিছু শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর বলে দেন। ছাত্রদের থেকে তারা টাকা নেন। কিছু মানুষ, তারা শিক্ষকতার নামে এ ধরনের কাজ করেন, যা সমগ্র শিক্ষক সমাজকে অপমানিত করতেছেন। এ ধরনের লোককে সরকার বের করে দেবে। তাঁদের চিহ্নিত করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন নাহিদ।
পরে ৩৩ জন শিক্ষার্থীর হাতে চ্যান্সেলর রচনা প্রতিযোগিতার স্বর্ণপদক তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী।