‘কোকোকে দেখে খালেদা জিয়া ছটফট শুরু করলেন’
বহুল আলোচিত ওয়ান-ইলেভেন বা এক-এগারোর সময়টাকে ‘সবচেয়ে কঠিন, ভয়ানক’ হিসেবে উল্লেখ করলেন বিশিষ্ট আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। ওই সময় বিচার অঙ্গনে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনা তুলে ধরেছেন এনটিভি অনলাইনের কাছে।
এনটিভি অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সানাউল্লাহ মিয়া এক-এগারোর সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ঘিরে চলা কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন। তুলে ধরেছেন তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর বিষয়ে কিছু অজানা তথ্য।
সাক্ষাৎকারটি ‘ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও এতটা হয়নি’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে।
সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, “বিগত ওয়ান-ইলেভেনের সময়টা ছিল সবচেয়ে কঠিন, ভয়ানক। তখনকার সময়ের কিছু কথা বলি। বেগম জিয়াকে ধমক দিয়ে বলা হলো, তাঁকে দেশের বাইরে পাঠানো হবে। টিকেট, ফ্লাইট সবই রেডি। ম্যাডাম আমাকে ফোন করলেন। বললেন, ‘সানাউল্লাহ আমাকে তো দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেবে।’ তখন আমি বললাম, ম্যাডাম আপনি যদি দেশের বাইরে চলে যান, তাহলে এ সরকারকে কোনোভাবেই ক্ষমতা থেকে নামানো যাবে না। আপনি কোনোভাবেই বিদেশে যাবেন না।”
বিশিষ্ট এই আইনজীবী বলেন, “পরে আরেকদিন রাত ৩টার দিকে ম্যাডাম আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, ‘সানাউল্লাহ আমাকে ওরা দেশের বাইরে পাঠাবে না, বরং কোর্টে নিয়ে যাচ্ছে। তুমি চলে এসো।’ আমি বললাম, ম্যাডাম আপনি চিন্তা করবেন না, সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছি। পরে আজানের আগে ভোরবেলায় অর্ধশতাধিক আইনজীবী নিয়ে হাজির হলাম আদালত প্রাঙ্গণে। একই সঙ্গে কিছু মিডিয়াকেও জানালাম।”
‘একই দিন হুইল চেয়ারে করে আরাফাত রহমান কোকোকেও আদালতে আনা হলো। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) তাঁকে দেখলেন। দেখে বিমর্ষ হয়ে ছটফট করতে শুরু করলেন। তিনি আগে বুঝতে পারেননি যে, কোকোসহ সবাইকে এত নির্যাতন করা হয়েছে। ম্যাডামের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। পরে বিচারক যখন দেখলেন, ম্যাডাম জিয়া বিষয়টি দেখে ছটফট করছেন, কিছু বলতে পারছেন না। পরে আদালত দ্রুত কোকোকে পাঠিয়ে দিয়েছেন,’ বলেন সানাউল্লাহ মিয়া।
সানাউল্লাহ মিয়া আরো বলেন, ‘একই অবস্থা হয়েছিল তারেক রহমানের ক্ষেত্রেও। আদালতে একদিন আনার পর তিনি তো আর হাঁটতে পারলেন না।’
‘এসব নির্যাতনের কারণে কোকো তো মারাই গেলেন। বেগম জিয়ার জন্য এটি ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। তাঁর যে দেশপ্রেম এটি আপনি কীভাবে দেখবেন? আমার চেয়ে আর বড় সাক্ষী আর কেউ নেই। ওই সব দিনের কথা মনে পড়লে শরীর শিউরে ওঠে,’ যোগ করেন জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীদের মামলা পরিচালনা করেন তিনি।