আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের ৫ মামলা
চোরাচালানের মাধ্যমে প্রায় ১৫ মণ সোনা ও হীরা আনা এবং এসব মূল্যবান সামগ্রী কর নথিতে গোপন রাখায় আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে পাঁচটি মামলা করা হয়েছে।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশান, ধানমণ্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় এসব মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
এর মধ্যে গুলশান থানায় দায়ের করা হয়েছে দুটি মামলা। যেগুলোর বাদী শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এম আর জামান বাঁধন ও বিজয় কুমার রায়। এ ছাড়া ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার মাহমুদ, রমনা থানার মামলার বাদী মোহাম্মদ জাকির হোসেন এবং উত্তরা থানায় করা মামলার বাদী মো. আরিফুল ইসলাম।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মঈনুল ইসলাম জানান, মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষের দিলদার আহমেদ সেলিম, গুলজার আহমেদ এবং আজাদ আহমেদকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনার আলোকে এসব মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ধারা ২ (ঠ) এবং কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯-এর ধারা ১৫৬ (৫) অনুযায়ী শুল্ক গোয়েন্দা এই মানিলন্ডারিং মামলাগুলোর তদন্ত করবে।
এর আগে আপন জুয়েলার্সের মালিকের বিরুদ্ধে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণালংকার মজুদ করার অভিযোগে দ্য কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ অনুযায়ী ঢাকার কাস্টম হাউসে পাঁচটি কাস্টমস মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ ছাড়া স্বর্ণালংকার মজুদ, মেরামত, তৈরি, বিক্রিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ভ্যাট ফাঁকি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটগুলো কাজ করছে বলে জানান শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
সেই সঙ্গে আয়কর নথিতে অপ্রদর্শিত সোনা দেখানোর কারণে সংশ্লিষ্ট আয়কর জোনের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তা ছাড়া চোরাচালান, শুল্ক ফাঁকি, মানিলন্ডারিং, ভ্যাট ফাঁকি, আয়কর ফাঁকি ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অবৈধ সম্পদ অর্জনে দুর্নীতি হওয়ায় দুদক আইনে ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনকে বলা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানিয়েছে, আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা স্বর্ণের অর্থ অবৈধভাবে ব্যবহার করেছে। একই সঙ্গে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের সঠিক পরিমাণ আয়কর নথিতে প্রদর্শন না করে এর উৎস গোপন করেছেন। তাদের এসব কার্যকলাপ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ধারা ২-এর (ফ)(ই) এবং ২(শ)(১৮) অনুযায়ী মানিলন্ডারিং হিসেবে বিবেচিত, যা একই আইনের ধারা ৪ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য।
উল্লেখ্য, বনানীর একটি হোটেলে ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে প্রায় ১৫ মণ সোনা ও হীরার অলংকার উদ্ধার করা হয়। পরে এসব অলংকার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়।