বঙ্গবন্ধু হত্যায় অনেক রাঘববোয়াল : প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অনেক রাঘব বোয়াল জড়িত ছিল। এই মামলার নথি পর্যালোচনা করে সেটি জানা গেছে। কিন্তু তদন্তে ত্রুটির জন্য তাদের বিচারে সোপর্দ করা যায়নি।
আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনের সামনে রক্তদান কর্মসূচিতে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ কাপুরুষোচিত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে যে রক্ত ঝরানো হয়েছে তার প্রতিদানে রক্তদান কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা গরিব-অসহায়দের জন্য রক্তের ব্যবস্থা করছি।’
‘সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে গণমাধ্যমে আমি কোনো কথা বলব না। রায় নিয়ে প্রকাশ্যে বা গণমাধ্যমে কিছু বলব না। তবে যা বলার কোর্টে বলব।’
বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখলাম, এই ষড়যন্ত্রের মধ্যে আরো অনেক রাঘব বোয়াল জড়িত ছিল। কিন্তু তদন্তে ত্রুটির জন্য আমরা তাদের আর বিচারে সোপর্দ করতে পারিনি। যদিও আমাদের রায়ে আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি, এটি একটি ফৌজদারি ষড়যন্ত্র।’
এস কে সিনহা বলেন, ‘আজকে আমাদের ইতিহাসে একটি মর্মান্তিক দিন। উপমহাদেশে জাতির পিতা দুজনকে হত্যা করা হয়। একজন মহাত্মা গান্ধী, অপরজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
‘বঙ্গবন্ধু হয়তো বা কারো শত্রু বা বিরাগভাজন হতে পারেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শিশু শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ যাঁরা নব্য বিবাহিত, আজকে পত্রিকায় পড়লাম, তাঁদের গায়ে হলুদ হয়েছিল। এগুলো (মেহেদির রং) মুছে যায়নি। বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ নাসের, উনি রাজনীতিতে ছিলেন না। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর সমস্ত পরিবারকে এই ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা।’
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পৃথিবীর অন্য কোনো হত্যার মিল পাওয়া যায় না উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা স্তম্ভিত হয়ে যাই যে রকম তারা হত্যা করেছিল। আরো কষ্টদায়ক হলো বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যাকারীদের রাষ্ট্রের আইন দ্বারা বিচারের পথ বন্ধ করে দেওয়া। আমি এই বিচার বিভাগের একজন সদস্য হিসেবে অত্যন্ত গৌরবান্বিত বোধ করছি। এই সুপ্রিম কোর্ট ওই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে সেই বিচারের পথ প্রশস্ত করেছিল।’
হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী পর্বে উভয় বিভাগের বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে সহায়তায় রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।