আরেক আসামিকেও ধরিয়ে দিল জনতা
সিলেটে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন (১৩) হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামি আলী হায়দার ওরফে আলীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে গ্রামবাসী।
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেনের কাছে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে জালালাবাদ থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, আলী হায়দার অন্যতম নির্যাতনকারী কামরুলের বড় ভাই। রাজনকে নির্যাতনের ভিডিওতে তাঁকেও দেখা গেছে। গত ৮ জুলাই শিশু রাজনকে হত্যার পর লাশ গুম করার সময় এলাকাবাসীর ধাওয়ায় পালিয়ে যান তিনি। তবে মুহিত আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ নিয়ে এজাহারভুক্ত চার আসামির তিনজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। তিন নম্বর আসামি কামরুলকে সৌদি আরবে পালিয়ে গেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতায় তাঁকে আটক করা হয়। পরে সেখানকার পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার রহমত উল্লাহ জানান, এ হত্যা মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন বিভিন্ন মেয়াদে পুলিশের হেফাজতে (রিমান্ড) রয়েছে।
এরই মধ্যে মামলার আসামি দুলাল আহমদ, নির্যাতনের ভিডিও ধারণকারী নূর আহমদ. কামরুলের ভাই মুহিত আলম ও স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে প্রকাশ্যে শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় নির্যাতনের ভিডিওচিত্রও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। লাশ গুম করার সময় স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে আটক করেন সিলেট সদর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুহিত আলমকে। পরে মুহিতকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় মুহিত, তাঁর ভাই কামরুল ইসলাম, আলী হায়দার ও স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন রাজনের বাবা।
গত সোমবার পুলিশ মুহিতের স্ত্রী লিপি বেগম ও আত্মীয় ইসমাইল হোসেন আবলুসকে পৃথক স্থান থেকে আটক করে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পরে লিপিকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ ছাড়া রাজন হত্যাকাণ্ডে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগে দুই প্রত্যক্ষদর্শী আজমত উল্লাহ ও ফিরোজ আলীকে গত মঙ্গলবার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে সিলেট শহরতলির টুকেরবাজার এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন বুধবার দুপুরে শহরতলির শেখপাড়া থেকে এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় আরেক আসামি দুলালকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার শুরুতে দুলালের নাম এজাহারে না থাকলেও রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে এজাহারে নাম অন্তর্ভুক্ত করে পুলিশ। রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা মুঠোফোনে ভিডিও ধারণকারী নূর আহমেদকে বুধবার সন্ধ্যায় শহরতলির জাঙ্গাইল গ্রামের স্বজনরা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।