রাজন হত্যা : আরেক আসামি রুহুল গ্রেপ্তার
সিলেটে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ও রাজনের বাবাকে মামলা না করার হুমকিদাতা রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বিকেল ৩টার দিকে সিলেট শহরতলির টুকেরবাজার হায়দারপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে জালালাবাদ থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে রাজন হত্যা মামলায় নয়জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন জানান, রুহুল আমিন রাজন হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি আলী হায়দারের শ্যালক। গত ৮ জুলাই রাতে রাজনের বাবা শেখ আজিজ আলম থানায় মামলা করতে এলে রুহুল আমিন তাঁকে মামলা না করতে হুমকি দেন। তিনি আলী হায়দার ও মুহিত আলমের সঙ্গে রাজনের লাশ গুমের সময় গাড়িতে ছিলেন। পরে স্থানীয় জনতা ধাওয়া দিলে রুহুল আমিন পালিয়ে যান।
গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে প্রকাশ্যে শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় নির্যাতনের ভিডিওচিত্রও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। লাশ গুম করার সময় স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে আটক করেন সিলেট সদর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুহিত আলমকে। পরে মুহিতকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় মুহিত, তাঁর ভাই কামরুল ইসলাম, আলী হায়দার ও স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন রাজনের বাবা।
গত সোমবার পুলিশ মুহিতের স্ত্রী লিপি বেগম ও আত্মীয় ইসমাইল হোসেন আবলুসকে পৃথক স্থান থেকে আটক করে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পরে লিপিকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তিন নম্বর আসামি কামরুল সৌদি আরবে পালিয়ে গেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতায় তাঁকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে সেখানকার পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ছাড়া রাজন হত্যাকাণ্ডে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগে দুই প্রত্যক্ষদর্শী আজমত উল্লাহ ও ফিরোজ আলীকে গত মঙ্গলবার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে সিলেট শহরতলির টুকেরবাজার এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন বুধবার দুপুরে শহরতলির শেখপাড়া থেকে এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় আরেক আসামি দুলালকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার শুরুতে দুলালের নাম এজাহারে না থাকলেও রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে এজাহারে নাম অন্তর্ভুক্ত করে পুলিশ। রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা মুঠোফোনে ভিডিও ধারণকারী নূর আহমেদকে বুধবার সন্ধ্যায় শহরতলির জাঙ্গাইল গ্রামের স্বজনরা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে আসামি আলী হায়দারকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় সদর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের লোকজন।
রাজন হত্যা মামলাটি বর্তমানে সিলেট মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করছে।