রুপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলা অগ্রাধিকার পাবে : আইনমন্ত্রী
আইনের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা রুপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলা অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
সর্বশেষ সময়ের রুপা ধর্ষণ ও হত্যা প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ‘ধর্ষকরা কত বেপরোয়া হলে, কত অমানুষ হলে ধর্ষণের পর তাকে আবার হত্যা করতে পারে। এ মামলায় আসামিদের ধরা হয়েছে, তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। কাজেই আমি এখন বলতে পারি যে, তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
মন্ত্রী বলেন, সারা দেশে চলমান ধর্ষণ মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেবে সরকার। তিনি বলেছেন, এই মামলাগুলোকে চিহ্নিত করে চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিতে প্রসিকিউশনসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্ষকদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়, আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে এবং রাষ্ট্রপক্ষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ধর্ষকরা যেন কোনোভাবেই রেহাই না পায়, সে জন্য আমরা সচেষ্ট আছি।’
মন্ত্রী বলেন, স্বাভাবিকভাবেই এসব মামলার বিচার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে নিষ্পত্তি হবে। এই মামলাগুলোকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে কার্যতালিকার প্রথমে থাকবে। সেগুলো দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।
এই ধরনের ঘটনা যেন দেশে আর না ঘটে সে জন্যই ধর্ষণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা এখানেই শেষ।’
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৫ আগস্ট রাতে আইনের শিক্ষার্থী রুপা বগুড়া থেকে ছোঁয়া পরিবহনের একটি বাসে করে ময়মনসিংহ যাচ্ছিলেন। ওই সময় ওই তরুণী ছাড়াও বাসে পাঁচ-ছয়জন যাত্রী ছিল। অন্য যাত্রীরা সিরাজগঞ্জ মোড়, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্ত ও এলেঙ্গায় নেমে যান। এরপর বাসটি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কাছাকাছি এলে বাসচালকের সহকারী শামীম রুপাকে জোর করে বাসের পেছনের আসনে নিয়ে যায়।
এ সময় রূপা তাঁর কাছে থাকা পাঁচ হাজার টাকা ও মুঠোফোন শামীমকে দিয়ে তাঁকে নির্যাতন না করতে হাতজোড় করে অনুরোধ করেন। কিন্তু শামীম কোনো কথাই শোনেনি। পরে শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর তাঁকে ধর্ষণ করে। রুপা কান্নাকাটি ও চিৎকার করা শুরু করলে তারা তিনজন মুখ চেপে ধরে। একপর্যায়ে ঘাড় মটকে রূপাকে হত্যা করে। পরে মধুপুর উপজেলা সদর অতিক্রম করে বন এলাকায় রাস্তার পাশে লাশ ফেলে রেখে চলে যায়।
এদিকে, রাতে মধুপুর বনের ভেতর সড়ক থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন ২৬ আগস্ট শনিবার নিহত তরুণীর পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাত হিসেবে তাঁর লাশ দাফন করা হয় টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে। ২৮ আগস্ট সোমবার রাতে মধুপুর থানায় গিয়ে অজ্ঞাতনামা ওই তরুণীর ছবি ও পরনের সালোয়ার-কামিজ দেখে তরুণীর বড় ভাই হাফিজুর রহমান তাঁকে শনাক্ত করেন। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছোঁয়া পরিবহনের বাসচালক হাবিবসহ (৩৫) পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।