ছাত্রলীগ সব সময় আমাদের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান। তিনি ফরিদপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। রাজনীতিতে তাঁর আগমন ঘটে স্থানীয়ভাবে ছাত্ররাজনীতিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের সকল সংকটে যেমন-১৫ আগস্ট, শেখ হাসিনার দেশে আগমন অতঃপর ক্রান্তিকালীন রাজনীতি চর্চা, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। এসব বিষয় নিয়েই সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অংশ তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুহম্মদ আকবর।
এনটিভি অনলাইন : আপনার রাজনৈতিক জীবনের শুরুটা কীভাবে?
আবদুর রহমান : আমি ৬৯ সালে ছিলাম বোয়ালমারি উপজেলা হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। ১৯৬৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেরোসিন দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে সামসুজ্জোহাকে হত্যা করা হয়। সারা দেশেই এর প্রতিবাদ হয়। প্রায় সব গ্রাম-গঞ্জেই তখন উত্থাল অবস্থা। আমাদের ওখানে একটা রেলস্টেশন ছিল সেখানেই অবরোধ করি। ওইদিন থেকে মূলত ছাত্ররাজনীতির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। অন্যায় অবিচারের প্রতি আমার একটা অনুভূতি তৈরি হয়। একটি প্রতিরোধী চরিত্র তৈরি হয়।
এনটিভি অনলাইন : আপনার পরিবারের অন্য কেউ রাজনীতি করতেন কি না? বাবা-মা, চাচা…
আবদুর রহমান : না।
এনটিভি অনলাইন : আপনার বাবা কী করতেন?
আবদুর রহমান : আমার বাবা একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান ছিলেন। ধর্মশিক্ষা শেষ করে তিনি মধুখালির একটি মসজিদের ইমামতি করতেন। ৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আমি একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি। ওই বছরই আমি মেট্রিক পাস করি। তারপর মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে চলে যাই। রানাঘাট ক্যাম্পে ২৪ দিন থাকার পর আমি জন্ডিসে আক্রান্ত হই। তখন সেই ক্যাম্পের ইনচার্জ ছিলেন মাগুরার আসাদুজ্জামান সাহেব। তখন তিনি একটি মুসলমান বাড়িতে রাখলেন। কারণ, ক্যাম্পে তো ওষুধ বা তত্ত্বাবধানের তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সেখানে কিছুদিন থাকবার পরে আমি স্থানীয়ভাবে ট্রেনিংটা নিয়ে দেশে আসি। আসার পর স্থানীয়ভাবে আমাদের কমান্ডার ছিলেন আলাউদ্দিন সাহেব। তাঁর নেতৃত্বে আমরা কাজ করি। আমাদের ওখানে একটা রাজাকার বাহিনী তখন প্রচণ্ড রকমভাবে অত্যাচার, অনাচার শুরু করে। তার সঙ্গেই মূলত বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ হয়; চূড়ান্ত পর্যায়ে তাদের পরাস্ত করি।
যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ১৯৭২-৭৩ সালে আমি ফরিদপুর ইয়াসিন কলেজে ভর্তি হই। সে সময় আমি ইয়াসিন কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি নির্বাচতি হই। ৭৩-৭৪ সালে ওই কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হই। ৭৪ সালের শেষ দিকে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে অনার্সে ভর্তি হই। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, ওই কলেজের ভিপি ইলেকশন করব। এটা সাংগঠনিকভাবেও সিদ্ধান্ত হয়। আমি জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক হই। সে যা হোক, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একটা হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটল। আপনারা জানেন ওইদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সহপরিবারে হত্যা করা হয়। তখন আমার ভেতর থেকেই এক ধরনের প্রতিবাদ জন্ম নেয়। প্রতিবাদী আবেগ থেকে আকাঙ্ক্ষা থেকে আমি ভারত চলে যাই। সেখানে আমি প্রথম ভারত সোভিয়ত-মৈত্রী অফিসে উঠি। সেটার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অজয় বাবু। প্রাথমিকভাবে সেখানে আশ্রয়গ্রহণ শেষে আমরা বনগাঁওতে একটা ক্যাম্প করি। প্রায় দুই আড়াই শত ছেলে একটা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নেই। এমতাবস্থায় ভারতে একটা জাতীয় নির্বাচন হয় এবং ইন্দিরাগান্ধী গভর্নমেন্ট ফেল করল। তখন আমাদের বিভিন্ন জায়গায় যে ক্যাম্প হয়েছিল তা সরিয়ে দেওয়া হয়। সেসময় একজন এমএলএ ছিলেন। তাঁকে আমরা কাকা বাবু বলে সম্বোধন করতাম। উনার সহায়তায় প্রায় চার মাস মাটি কেটে সার্ভাইব করি। জিয়াউর রহমান তখন ক্ষমতায়।
পরবর্তীকে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই দেশে ফিরে আসি যে, জনমত গড়ে তুলে, মানুষকে সংগঠিত করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের জন্য আমরা আন্দোলন গড়ে তুলব। সে অনুযায়ী আমরা যে যার মতো করে কাজ করি। তখন বাংলার ডাক বলে একটা পত্রিকা বের হত লন্ডন থেকে। সেটি ভারত হয়ে বাংলাদেশে আসতো। সেই পত্রিকাও বিভিন্ন জায়গায় বিতরণ করি। মূলত, আমরা ছদ্মবেশে, ছদ্মনামে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে কাজ করি। আট মাস পর আমার বাবা খুব অসুস্থ হয়ে যান। আমি তাঁকে ফরিদপুর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে বাবার জন্য ওষুধ কেনার জন্য যাই। সেখানে কয়েকজন এনএসআইয়ের লোক আমাকে বললেন আপনাকে থানায় যেতে হবে ওসি সাহেব তলব করেছেন। মোট কথা তিনি আমাকে যা বললেন, আমাদের তো কিছু করার নেই। আপনাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যেতে বলা হলো। সেখান থেকে কোর্টে হাজিরা দিয়ে আমাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হলো। সেখানে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করল।
এনটিভি অনলাইন : সেখানে কী জিজ্ঞেস করা হয়েছিল?
আবদুর রহমান : জিজ্ঞসে করল যে, আমরা ভারতে কি কারণে গিয়েছিলাম, আমাদের পরিকল্পনা কি, ইত্যাদি ইত্যাদি। ওই ব্যাপারটা তো তখন আর আমি বলিনি। এটা সত্য যে তারা আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেনি। সে যা হোক তারা আমাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দিলেন।
এনটিভি অনলাইন : সেখানে কতদিন ছিলেন?
আবদুর রহমান : ৬ মাসেরও বেশি।
এনটিভি অনলাইন : কত সালে?
আবদুর রহমান : ৭৬ সালের অক্টোবরের দিকে। তারপর জেল থেকে বেরিয়ে গিয়ে কিছুদিন পরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হলো। জিয়াউর রহমানের বিপরীতে আমাদের প্রার্থী ছিলেন জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী। আমি স্থানীয় পর্যায়ের প্রচার প্রচারণায় অংশ নেই। আমার অনার্স পড়া হলো না। ডিগ্রি পড়তে হলো। আমি জেলে থেকেই পরীক্ষা দিয়ে ডিগ্রি পাস করি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। ১৯৭৯ সালে প্রায় পাঁচ বছর পর পড়ালেখা গ্যাপ থাকার পর সেখানে ভর্তি হই। ১৯৮১ সালে আমার নেত্রী শেখ হাসিনা দেশে এলেন। আসার পর ছাত্রলীগের যে সম্মেলন হলো সখানে আমি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হই। ১৯৮৩ সালে আমি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই এবং ৮৬ সালে আমি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হই।
এনটিভি অনলাইন : আপনার সময় সভাপতি ছিলেন সুলতান মনসুর..
আবদুর রহমান : হ্যা। ছাত্ররাজনীতি শেষ হওয়ার কিছুদিন পর ২০০০ সালে নেত্রী আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অবজারভার মেম্বার বানালেন। ২০০২ সালের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হই। ২০০৮ সালে এমপি নির্বাচন করি এবং প্রায় এক লাখ পাঁচ হাজার ভোটের ব্যবধানে আমি নির্বাচিত হই। বলা যায় ওই সংসদীয় আসনের ইতিহাসে আমি সবচাইতে বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হই। ২০০৬ সালের অক্টোবরে আমি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হই।
এনটিভি অনলাইন : পারিবারিক জীবনে পদার্পণ করেন কত সালে?
আবদুর রহমান : ১৯৭৯ সালে। ৮৮ সালের বন্যায় ওই সব ডাকসু থেকে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করি। তখন ওই ক্যাম্পে আমি এবং সে ওই ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলাম। ৮৮ সালের শেষ দিকে ১৮ অক্টোবর আমাদের আকদ হয়। মাননীয় নেত্রী আমার শ্রদ্ধেয় আপা কিন্তু আমার বিয়েটি দেন। বিয়ের সামগ্রিক ব্যবস্থা করেন।
এনটিভি অনলাইন : বিয়েটা কি পারিবারিকভাবেই হয়?
আবদুর রহমান : না পরিবারিকভাবে নয়। ওই সময় ত্রাণ বিতরণ কাজে অংশ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক আসত। তখন আমার স্ত্রী ঢাকা ডেন্টাল কলেজ থেকে পাস করেন। সেখানেই পরিচয়। কথা হয় আরকি। তখন আমি নেত্রীকে বলি যে, আমি একটি মেয়েকে পছন্দ করি। তখন সন্তুষ্ট চিত্তেই তিনি আমার কথা শুনেন এবং পরবর্তী সময়ে বাকি কাজ সম্পন্ন করেন।
এনটিভি অনলাইন : আপনার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও তো আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন…
আবদুর রহমান : আমার শ্বশুর তো টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দু্ই দুইবার এমপিও ছিলেন। যাই হোক, ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি মাসে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে ওকে নিয়ে আসি।
এনটিভি অনলাইন : আপনার সন্তানেরা কী করেন?
আবদুর রহমান : আমার চার সন্তান। আমার বড় মেয়েটা লন্ডনে ল ’তে মাস্টার্স করছে। মোজো মেয়েটা সিডনি থেকে গ্রাজুয়েশন করে দেশে আসছে। পরের মেয়েটাও ল-তে পড়ে। আমার একমাত্র ছেলে স্কলাস্টিকায় পড়ে সিক্সে।
এনটিভি অনলাইন : রাজনীতির প্রসঙ্গে আসি। কিছুদিন রাজনীতির অঙ্গন গরম ছিল ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের ইস্যু নিয়ে। এরপর এলো রোহিঙ্গা ইস্যু। এভাবেই যদি পরপর নানা ইস্যু আসে তাতে করে নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে কি না?
আবদুর রহমান : আমি মনে করি না। একেবারেই না। আমাদের সংবিধানের আলোকে স্বাধীনভাবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এর স্পষ্ট সমাধানও দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের ওপরে যে মিয়ানমার অত্যাচার করছে আমরা তার নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে মিয়ানমারকে বলব, তাদের যেন ফিরিয়ে নেয়। আমরা মানবিক দিক বিবেচনায় সাময়িকভাবে আশ্রয় দিয়েছি মাত্র। দুর্দশা জীবনের পাশে সরকার দাঁড়িয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। ফলে, আমাদের বিশ্বাস মিয়ানমার সরকার একটি কার্যকর পদক্ষেপ নিবে। আর ষোড়ষ সংশোধনী বাতিল রায় নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নাই। রায়ে যে কিছু অপ্রয়োজনীয় অবজারবেশন রয়েছে তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি, কথা বলেছি।
এনটিভি অনলাইন : আমরা এমনও শুনছি যে, প্রধান বিচারপতিকে বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে সরকার বাধ্য করবে…
আবদুর রহমান : না। আমি বলব এটা আমার নজরে নেই।
এনটিভি অনলাইন : রোহিঙ্গা ইস্যু কিংবা ষোড়শ সংশোধনী ইস্যুতে সরকার জনগণের কাছে কি স্বচ্ছ চিন্তার বহির্প্রকাশ ঘটাতে পেরেছে?
আবদুর রহমান : নিশ্চয়ই। কেন পারবে না? এটা তো দিবালোকের মতোই সত্য। সরকারের যা বলার আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফ করে বলা হয়েছে। এখানে গোপনীয়তার কোনো বিষয় নেই।
এনটিভি অনলাইন : এই দুইটা বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্য কখনো কখনো স্ববিরোধিতার প্রকাশ করেছে। এতে করে কী মনে হয় যে আওয়ামী লীগের নেতাদের একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়ার অভাব রয়েছে?
আবদুর রহমান : বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে কথা বলেছে কিন্তু সব কথার মূল কথা ছিল অপ্রয়োজনীয় কিছু অবজারভেশন প্রত্যাহার করা, যা নিয়ে কেউ যেন রাজনীতি করতে না পারে। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের সব নেতাকর্মী মানবিক দিক চিন্তা করেই আমাদের নেত্রীর নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছে।
এনটিভি অনলাইন : আপনার যে সাংগঠনিক এলাকা খুলনা এবং বরিশাল এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একটা অস্থিরতা আছে। বলতে শোনা যায়, বরিশালের আওয়ামী রাজনীতি একজন ব্যক্তির হাতে ন্যাস্ত। খুলনাতেও অস্থিরতা। এ থেকে কী উত্তরণ ঘটবে বলে আপনি মনে করেন?
আবদুর রহমান : এ রকম বিষয় আমার কাছে পরিলক্ষিত হয়নি। শৃঙ্খলা অমান্য করার মতো অবস্থা নেই। আপনি দেখেন বর্তমানে সে অবস্থাটি নেই। দেখুন কারো হাতে একক ক্ষমতা বা ঔদ্ধ্যতপূর্ণ আচরণ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কেউ করতে পারে না, করে পার পেতে পারে না। আমি মনে করি না যে এমন অবস্থা আছে। কিছুটা মতবিরোধ ছিল সেটা তো থাকবেই। এটাও এখন নেই বলা যায়। কারণ, জাতীয় স্বার্থে, দলের স্বার্থে আওয়ামী লীগ নেতারা এসব ভুলে যায় এবং প্রয়োজনীয় কাজটাই করে।
এনটিভি অনলাইন : বরিশালে দেখা গেছে এক নেতা অন্য নেতার বিরুদ্ধে প্রেস কনফারেন্স করে বক্তৃতা দিচ্ছেন…
আবদুর রহমান : সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের দলের সভানেত্রীর নির্দেশে আমরা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছি যাতে পুনরায় এ রকম ঘটনা না ঘটে।
এনটিভি অনলাইন : আপনার যে নির্বাচনী এলাকা সেখানে আওয়ামী লীগের অনেক নতুন মুখ দেখতে পাচ্ছি- যাঁরা আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন চাইবেন। এ বিষয়ে আপনার মধ্যে কোনো হতাশা কাজ করে কি না?
আবদুর রহমান : না, তা কেন হবে? যারা রাজনীতি করেন তাঁরা তো আগ্রহ দেখাতেই পারেন। এতে আমার কোনো বিরূপ মন্তব্য নেই, বরং আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের স্বাগত জানাই, অভিনন্দন জানাই। আরো নতুন মুখ আসুক। এতে তারা অন্তত নৌকা মার্কার কথা তো বলবে। ভোটের জায়গায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে, চূড়ান্ত পর্যায়ে দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা তাঁর হয়েই কাজ করব। আমার বিশ্বাস প্রত্যেকেই তা করবে।
এনটিভি অনলাইন : আপনার কি বিশ্বাস করেন যে, জনগণ আপনাকে অতীতের জনপ্রিয় স্থানে রেখেছে?
আবদুর রহমান : জনগণ আমাকে খারাপভাবে দেখে এ রকম পরিস্থিতি আমি দেখিনি। তারপরও দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সে সিদ্ধান্তই আমি মেনে নেব।
এনটিভি অনলাইন : আপনি ক্রান্তিকালে ছাত্ররাজনীতি করেছেন? ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আপনার কি মনে হয়, ছাত্রলীগের অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য অনুসরণ করে বর্তমান ছাত্রলীগ এগোচ্ছে?
আবদুর রহমান : আমার তো মনে হয় না যে, তার কোনো বিচ্যুতি ঘটেছে। তারা সব সময় আমাদের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এগোচ্ছে। এর বিচ্চ্যুতি ঘটে নাই। সাংগঠনিকভাবে বিচ্চ্যুতি ঘটার কোনো কারণ নেই। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে।
এনটিভি অনলাইন : এমন কোনো ঘটনা আপনার মনে পড়ে- যা আপনাকে আজও অনুপ্রাণিত করে?
আবদুর রহমান : হ্যাঁ আমার মনে আছে। যেদিন মাননীয় নেত্রী দেশের ফিরে আসেন তখন একটা অকারণ বিতর্ক ছিল। ছবির মুজিব না আদর্শের মুজিব, মুজিবের উত্তরসূরি না আদর্শের উত্তরসূরি এই নিয়ে যখন আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ছেড়ে দিয়েছিল। ঠিক তখন বিরামহীন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করেছিলাম। সেই যে উদ্যম, সাহসিকতা আমার আজকের দিনে খুব মনে পড়ে, আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়।
এনটিভি অনলাইন : আপনাকে ধন্যবাদ।
আবদুর রহমান : ধন্যবাদ এনটিভি অনলাইন এবং আপনাকেও।