‘ক্যাম্প থেকে ছড়িয়ে পড়া রোহিঙ্গাদের গ্রেপ্তার করা হবে’
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা যারা ছড়িয়ে পড়েছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে। কারণ তারা এ দেশে অবৈধ কিন্তু যেহেতু বিষয়টি মানবিক তাই তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আবার শরণার্থী শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
আজ দুপুরে রাজধানীর পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।
আইজিপি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যদি শরণার্থী শিবির থেকে ছড়িয়ে পড়ে, তবে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। কোনো রোহিঙ্গা যদি কারো খোঁজে থাকে অথবা কারো আশ্রয়ে থেকে থাকে তাহলে পুলিশকে জানাতে হবে। এবং পুলিশ তাদের আবার শরণার্থী শিবিরে ফেরত নিয়ে যাবে। কারণ আগেও দেখা গেছে, রোহিঙ্গারা এই দেশে এসে নাগরিক হওয়ার চেষ্টা করে। পাসপোর্ট নেওয়ার চেষ্টা করে।’
এ কে এম শহিদুল হক আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের চেহারা অনেকটা বাঙালিদের মতো, তাই তাদেরকে শনাক্ত করতে সমস্যা হয়। আর এরা যদি আমাদের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যায় তবে এরা বিভিন্ন প্রতারণার আশ্রয় নেবে। আর এতে অনেকে প্রতারকদের ফাঁদে পড়বে। এসবের জন্য সামাজিক একটা সমস্যা সৃষ্টি হবে।’
রোহিঙ্গাদের আইডি কার্ডের গুরুত্ব সম্পর্কে আইজিপি বলেন, ‘মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার পর তারা বাধ্য হয়েই পালিয়ে আসতে শুরু করেছে। প্রথমে বিজিবি ও পুলিশ তাদের এই দেশে ঢুকতে বাধা দিয়েছিল। কিন্তু পরে তাদের আর বাধা দেওয়া হয়নি, তারা ২৭০ কিলোমিটার সীমানা পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। বাংলাদেশ সরকার মানবিক দিক থেকে তা দেখছে। যারা ভেতরে ঢুকেছে, তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের জায়গা দেওয়া হয়েছে খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং তাদের আইডি কার্ড দেওয়া হচ্ছে।’
আইজিপি আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য যে শরণার্থী শিবির তৈরি করা হয়েছে, তারা সেই শিবিরের মধ্যেই থাকবে। তারা যদি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়, তবে তাদের সরানো কঠিন হবে। এ জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা যেন এই শিবিরের বাইরে না যায়। তাদের যে আইডি কার্ড দেওয়া হচ্ছে, এই আইডি কার্ডের মাধ্যমেই তারা পরবর্তী সময়ে অন্যান্য সুযোগসুবিধা পাবে। আর যদি আইডি কার্ড না থাকে তবে পরবর্তী সময়ে সুযোগ-সুবিধা পাবে না। তাদের মঙ্গলের জন্য এই কার্ড দেওয়া হচ্ছে।’
‘তাদের (রোহিঙ্গা) এটা বুঝতে হবে যে তাদের কাছে পাসপোর্ট নাই, তাদের কাছে ভিসা নাই, তারা অবৈধ। তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তাই তাদেরকে শরণার্থী শিবিরের থাকতে হবে। বাইরে যাওয়া যাবে না।’ বলেন আইজিপি।
মিয়ানমারের দুই সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘প্রত্যেকটা দেশেরই একটা আইন থাকে, টুরিস্ট ভিসা নিয়ে এসে সাংবাদিকতা করবেন তা হতে পারে না। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আসতে হবে। ইমিগ্রেশনের ভিসার যে শর্ত, সেটি তারা ভঙ্গ করেছে। এ জন্য তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
বাংলার মাটিতে কোনো জঙ্গি সৃষ্টির হয়ে তা অন্য দেশে গিয়ে হামলা করবে এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী এই বিষয়টি নিয়ে তৎপর আছে। ত্রাণ দিতে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁদের জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে গিয়ে ত্রাণ দিতে হবে।
খাদ্য মজুদদারিদের সম্পর্কে আইজিপি বলেন, ‘কেউ যদি চাল বা খাদ্য মজুদদারি করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে, তবে তা আমাদের আইনে আছে সে অনুযায়ী বিধিমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’