পাহাড়ধসে বাড়ি বিধস্ত, আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং
বান্দরবানের সদর উপজেলার আজিজনগরে পাহাড়ধসে সাতটি বসতবাড়ি বিধস্ত হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আজিজনগর প্রাইমারি স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে প্রশাসন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
আজিজনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম জানান, গত বুধবার থেকে টানা বর্ষণে আজিজনগরে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। মাইকিং করে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শনিবার সকালে পাহাড়ধসে আজিজনগরের মিশনপাড়া এবং উত্তরপাড়ায় সাতটি ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে। তবে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে জানান, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বর্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে লোকজনকে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। তারপরও যারা ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে চাইছে না, তাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে জোর করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পাহাড়ধসে প্রাণহানি বন্ধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা আরো বাড়াতে হবে।
আজিজনগর পুলিশফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, অতি বৃষ্টিপাতে পাহাড়ধসে সাতটি কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে লোকজনকে আগেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আজিজনগরে এরই মধ্যে দুটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এদিকে বান্দরবানের মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, শনিবার বান্দরবানে ১৫৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর গত তিনদিনে জেলায় ২৩৩ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা জানিয়েছে, বান্দরবানের সাত উপজেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের ঢালুতে (পাদদেশে) এখনো বসবাস করছে লক্ষাধিক মানুষ। যার মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ অতিঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও থেমে নেই পাহাড়ের ঢালুতে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি স্থাপন এবং বসবাস।
সরকারি তথ্যমতে, পাহাড়ধসে ২০০৬ সালে জেলা সদরে মারা গেছে তিনজন, ২০০৯ সালে লামা উপজেলায় মারা গেছে শিশুসহ ১০ জন, ২০১০ সালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মারা গেছে পাঁচজন, ২০১১ সালে রোয়াংছড়ি উপজেলায় মারা গেছে দুজন আর ২০১২ সালে লামা উপজেলায় ২৮ জন এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১০ জন মারা গেছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জেলা শহরের বনরূপাপাড়ায় পাহাড়ধসে এক নির্মাণশ্রমিক এবং জুন মাসে দুই ভাইবোনের মৃত্যু হয়।