নির্বাচন নিয়ে বিপরীত মেরুতে আ.লীগ-বিএনপি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে বিপরীত মনোভাব নিয়ে এগোচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপি। কিছুদিন আগপর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিরপেক্ষতা নিয়ে বিএনপি আপত্তি জানালেও বর্তমানে সে অবস্থান থেকে সরে এসেছে দলটি। তাদের আপত্তি এখন নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে। দলটির নেতারা বলছেন, এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য হলো, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন।
কয়েক দিন ধরে বিএনপি নেতারা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে সমঝোতার মাধ্যমে সংলাপে বসার আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু এর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংলাপের দরজা বন্ধ।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে সমঝোতার মাধ্যমে সংলাপের ব্যবস্থা করতে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, 'জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার সমঝোতায় না এলে দেশে গণবিস্ফোরণ হবে।'
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো আগ্রহ নেই আওয়ামী লীগের। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই।’
‘তত্ত্বাবধায়ক বা সহায়ক—যেটাই বলেন, অন্য কোনো পন্থায় নির্বাচন হবে না।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘সহায়ক ও কোনো ভাবনার সরকার হবে না। আগামী নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। বিএনপি নির্বাচনে এলে আসবে, না এলে রাস্তায় গিয়ে চিৎকার করুক। তাদের সঙ্গে কোনো কথা হবে না। এরা ’৭১ ও ’৭৫-এর খুনি। খুনিদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না।’
১৪ দলের মুখপাত্র, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে বিজয়ের মাসে সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে।’
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক তোফায়েল আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ-বিএনপি দেশের দুটি বড় রাজনৈতিক দল। তারা তাদের নিজস্ব চিন্তায় এগোবে—এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সবার অংশগ্রহণে জনগণ যাতে একটি নিশ্চিত নির্বাচনের প্রত্যাশা করতে পারে, এমন পরিবেশ হওয়া জরুরি। সেটি এখনো হয়নি।'
সুশাসনের জন্য নাগরিক—সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘দেশে নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত নেই। নির্বাচনের পরিবেশ আদৌ হবে কি না, এ নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি, এই অনিশ্চয়তার ঘোর কাটবে।'