জামিনে মুক্তি পেয়ে ধন্যবাদ জানালেন প্রবীর সিকদার
তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে জামিন দিয়েছেন আদালত। ফরিদপুরের ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. হামিদুল ইসলাম আজ বুধবার সকালে জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে একই আদালত গতকাল মঙ্গলবার প্রবীর সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। ওই রিমান্ড চলা অবস্থায় ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার পুলিশ আজ বুধবার সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রবীর সিকদারকে আদালতে হাজির করে। এ সময় কোনো সাংবাদিককে আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে দেয়নি প্রশাসন।
পরে আইনজীবীরা জানান, আদালতে হাজির করার পর প্রবীর সিকদারের পক্ষে তাঁর আইনজীবী জামিন আবেদন করলে আদালত একজন আইনজীবীর জিম্মায় পাঁচ হাজার টাকার মুচলেকায় তা মঞ্জুর করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ নান্নু সাংবাদিকদের জানান, আসামি প্রবীর সিকদার একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এবং একজন সফল সাংবাদিক ও শিক্ষক। তাই তাঁকে জামিন দিলে তিনি পালিয়ে যাবেন না। পরে আদালত প্রবীর সিকদারের জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী জাহিদ ব্যাপারী বলেছেন, যেহেতু বিচারিক আদালত জামিন দিয়েছেন, তাই এ ব্যাপারে তাঁদের আর বক্তব্য নেই।
এদিকে জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর দুপুরে ফরিদপুর কারাগার থেকে প্রবীর সিকদারকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় আদালত চত্বরে নেওয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা। জেল থেকে বের হওয়ার সময় স্ত্রী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের দেখা যায়। তাঁরা প্রবীর সিকদারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
মুক্তি পেয়ে প্রবীর সিকদার সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি গণজাগরণ মঞ্চসহ যেসব ব্যক্তি ও সংগঠনের কর্মীরা তাঁর মুক্তির জন্য কাজ করেছেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রবীর সিকদার বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইয়েরা আমার মুক্তির ব্যাপারে যে ভূমিকা রেখেছেন এটা আমি সারা জীবন কৃতজ্ঞতার সঙ্গে মনে রাখব। প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের যে আচরণ, অন্তরের আচরণ তা না। সেটা তারা আমার মুক্তির ভেতরে প্রমাণ করেছেন। একই সঙ্গে সারা বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজ, সারা বাংলাদেশের পেশাজীবী সমাজ, গণজাগরণ মঞ্চকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’
প্রবীর সিকদারের মুক্তিতে তাঁর স্ত্রী অনিতা রানী সিকদার আনন্দ প্রকাশ করলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেশি কিছু বলতে চাননি সাংবাদিকদের।
গত রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার ইন্দিরা রোডের অনলাইন পত্রিকা কার্যালয় থেকে প্রবীর সিকদারকে আটকের পর রাতেই ফরিদপুরে আনা হয়। পরে তাঁর বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইন-২০০৬ সালের (সংশোধিত-২০১৩)-এর ৫৭ (১) ধারায় একটি মামলা করেন ফরিদপুর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) স্বপন পাল। ওই মামলায় প্রবীর সিকদারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, প্রবীর সিকদারের দেওয়া একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ায় তিনি (স্বপন পাল) সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করেছেন।