রাকিব হত্যায় অভিযোগপত্র দাখিল
খুলনায় শিশু রাকিব (১২) হত্যা মামলায় তিনজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির হয়ে এ অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। তিন আসামি হলেন গ্যারেজ মালিক মোহাম্মদ শরিফ, তার মা বিউটি বেগম ও মিন্টু খান।
urgentPhoto
এর আগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে পুলিশ কমিশনার নিবাস চন্দ্র মাঝি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি নিহত রাকিবের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেন।
নিবাস চন্দ্র মাঝি জানান, এ মামলায় দুজন ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৪০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্য আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যার অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি জানান, শরিফের গ্যারেজের কাজ ছেড়ে অন্য জায়গায় কাজ নেওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। মামলার তিন আসামিই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
এদিকে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খুলনা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী মোশতাক আহমেদ জানান, ৩ আগস্ট টুটপাড়ায় শরিফ মোটরসে শিশু রাকিবকে ধরে নিয়ে মলদ্বারে হাওয়ার নল ঢুকিয়ে পেটে বাতাস দিয়ে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, শরিফ ও মিন্টু খান এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ঘটনার সময় শরিফের মা বিউটি বেগম পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পেটে হাওয়া ঢোকানোর সময় রাকিব বারবার চিৎকার করে বলেছিল, ‘মামা আর দিয়েন না, আমি মরে যাচ্ছি।’ প্রায় ৪৫ সেকেন্ড পেটে হাওয়া ঢোকানোর পর রাকিব বমি করলে শরিফ ও মিন্টু খান রাকিবকে নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকার লোকজন শরিফ ও মিন্টুকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে পুলিশ বিউটি বেগমকেও আটক করে।
ঘটনার পরদিন রাকিবের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে তিনজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। তিন আসামিই পুলিশের রিমান্ডে অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
বাবা নুরুল আলম ও মা লাকী বেগম এই অভিযোগপত্র দেওয়ায় খুশি হয়েছেন বলে জানান। আসামিদের দ্রুত বিচার করে ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানান তাঁরা।